"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম,
---------------------------------------------
মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন-
---
"হে মু’মিনগণ !
তোমরা আল্লাহর নি‘আমাতের কথা স্মরণ কর যখন একটি সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে
তাদের হস্ত উত্তোলন করতে চেয়েছিল, তখন তিনি তোমাদের থেকে তাদের হাত নিবৃত্ত করেছিলেন।
আল্লাহকে ভয় কর, আর মুমিনগণ যেন আল্লাহর উপরেই ভরসা করে।"
__________[সুর-মায়িদাহ, আয়াত-১১]_______
~~~
১১ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ পাক নিজের আর একটি নিয়ামতের কথা মুমিনদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
যার বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপঃ
হযরত জাবির (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, কোন এক সফরে নবী করীম (সঃ) একটি মনযিলে অবতরণ করেন।
জনগণ ছায়াযুক্ত বৃক্ষরাজির খোঁজে বিচ্ছিন্নভাবে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছিলেন।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় হাতিয়ার একটি গাছে লটকিয়ে রাখেন। এমন সময় এক বেদুঈন এসে তাঁর তরবারীখানা হাতে টেনে নিয়ে বলে,
আপনাকে এখন আমার হাত থেকে কে বাঁচাতে পারে?
উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ
“মহামহিমান্বিত আল্লাহ (আমাকে বাঁচাবেন)।”
সে দ্বিতীয়বার এ প্রশ্নই করলো।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) পুনরায় এ উত্তরই দিলেন।
বেদুঈন তৃতীয়বার বললো,
“আপনাকে আমা থেকে রক্ষা করবে কে?”
তিঁনি উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ।
বর্ণনাকারী বলেন যে, এ কথা বলার সাথে সাথে বেদুঈনের হাত থেকে তরবারীটি পড়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীদেরকে ডাক দিলেন।
তাঁরা এসে গেলে তিনি তাঁদের কাছে বেদুঈনের ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। সে তখনও তার পার্শ্বে উপবিষ্ট ছিল।
কিন্তু তিঁনি (রাসুল সঃ) তার কোন প্রতিশোধ নিলেন না। কাতাদাহ (রঃ) বলেন যে,
কতগুলো তোক প্রতারণা করে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে হত্যা করতে চেয়েছিল এবং তারাই ঐ বেদুঈনকে গুপ্তঘাতক হিসেবে তাঁর নিকট পাঠিয়েছিল।
কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের পরিকল্পনা এভাবে ব্যর্থ করে দেন। সহীহ হাদীস দ্বারা জানা যায় যে,
ঐ বেদুঈনের নাম ছিল গাওরাস ইবনে হারিস।
---
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও তাঁর সাহাবীদেরকে হত্য করার উদ্দেশ্যে খাদ্যে বিষ মিশিয়ে তাদেরকে দাওয়াত করে।
কিন্তু মহান আল্লাহ এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জানিয়ে দেন। সুতরাং তারা বেঁচে যান।
---
একথাও বলা হয়েছে যে, কা'ব ইবনে আশরাফ এবং তার ইয়াহূদী সঙ্গীরা,
রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে কষ্ট দিতে চেয়েছিল। এটা ঐ সময়ের ঘটনা,
যখন নবী করীম (সঃ) আমেরী লোকদের দিয়াত গ্রহণের জন্যে তাদের নিকট গিয়েছিলেন।
ঐ সময় দুষ্টেরা (ষড়যন্ত্রকারীরা) আমর ইবনে জাহাশ ইবনে কা'বকে উত্তেজিত করতঃ বলেছিল-
“আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে নীচে দাঁড় করিয়ে রেখে আলোচনায় লিপ্ত করিয়ে রাখবো,
এ সুযোগে তুমি উপর থেকে তার উপর পাথর ফেলে দিয়ে তাঁকে দুনিয়া হতে বিদায় করে দেবে।”
কিন্তু মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে পথেই তাদের দুষ্টামির (ষড়যন্ত্রের) কথা জানিয়ে দেন।
সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীগণসহ সেখান হতে তখনই ফিরে আসেন।
---
এ আয়াতে ঐসব ঘটনারই উল্লেখ রয়েছে।
ইরশাদ হচ্ছে-মুমিনদের আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত। বিপদ আপদ থেকে রক্ষাকারী একমাত্র তিঁনিই।
এরপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) মহান আল্লাহর নির্দেশক্রমে বানূ নাযীরের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন।
তাদের কিছু সংখ্যক লোককে হত্যা করা হয় এবং কতক লোককে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
-----------------------[তফসীর ইবনে কাসির]
0 Comments