""""""""""""""""""""""'"""'""""""""""""""""""""""'""""""
[তফসীর, সুরা-আলে ইমরাম-১৩৫]
-----------------------------------------------------
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম,
---------------------------------------------
মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন-
---
"এবং যারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা,
নিজেদের প্রতি জুলুম করলে,
আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আল্লাহ ছাড়া কে আছে যে অপরাধ ক্ষমা করবে ? তারা যা করে ফেলে, জেনেশুনে তার পুনরাবৃত্তি করে না।"
_______[সুরা আলে ইমরান, আয়াত-১৩৫]_____
~~~
১৩৫ নং আয়াতের তাফসীর-
আল্লাহ তা'আলা বলেন যে,
তারা পাপ কার্য করার পর তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করে এবং তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে।
~~~
মুসনাদ-ইআহমাদে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ
“যখন কোন ব্যক্তি কোন পাপ কার্য করে, অতঃপর আল্লাহ পাকের সামনে হাযির হয়ে বলেঃ
"হে আমার প্রভু ! আমার দ্বারা পাপকার্য সাধিত হয়েছে, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
তখন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
“আমার বান্দা যদিও পাপকার্য করেছে, কিন্তু তার বিশ্বাস রয়েছে যে,
তার প্রভু তাকে পাপের কারণে ধরতেও পারেন, আবার ক্ষমা করতেনও পারেন,
আমি আমার ঐ বান্দার পাপ ক্ষমা করে দিলাম। সে আবার পাপ করে ও তাওবা করে,
আল্লাহ তাআলা এবারেও ক্ষমা করেন।
আবার পাপ করে ও তাওবা করে, আল্লাহ পাক তৃতীয়বারও ক্ষমা করেন।
সে চতুর্থবার পাপ করে ও তাওবা করে তখন আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করতঃ বলেনঃ
“আমার বান্দা এখন যা ইচ্ছে আমল করুক'। (মুসনাদ-ই-আহমাদ)
এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও মুসলিমেও রয়েছে।
~~~
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ
“আমরা একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট আরয করিঃ
"হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) ! যখন আমরা আপনাকে দর্শন করি
তখন আমাদের অন্তরে ভাবাবেগের সৃষ্টি হয় এবং আমরা মুত্তাকী হয়ে যাই।
কিন্তু যখন আপনার নিকট হতে চলে যাই তখন ঐ অবস্থা আর থাকে না,
ছেলে মেয়েদের ফাঁদে পড়ে যাই এবং পারিবারিক কাজ কর্মে লেগে পড়ি।'
রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বলেনঃ
‘জেনে রেখো, আমার নিকট অবস্থান কালে তোমাদের মনের অবস্থা যেমন থাকে,
যদি সর্বদা এরূপ থাকতো তবে ফেরেশতাগণ তোমাদের করমর্দন করতেন,
এবং তোমাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য তোমাদের বাড়ীতেই আগমন করতেন।
মনে রেখো, তোমরা যদি পাপ কর্ম না কর তবে আল্লাহ পাক তোমাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে নেবেন এবং,
অন্য এক সম্প্রদায়কে এখানে বসিয়ে দেবেন যারা পাপকার্য করবে,
অতঃপর ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং তিনি তাদেরকে ক্ষমা করবেন।'
~~~
আমরা বলিঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) ! জান্নাতের ভিত্তি কিসের তৈরী তা আমাদেরকে বলুন।'
তিঁনি বলেনঃ
‘একটি সোনার ইট ও একটি চাদির ইট এবং ওর গারা (দেয়াল ইত্যাদি বাঁধবার জন্যে চুন, বালি ও মাটি পানিতে মিশিয়ে যে কাদা তৈরী করা হয়) খাটি মৃগনাভির।
ওর পাথর মনি মুক্তার এবং মাটি হচ্ছে জাফরানের।
জান্নাতের নিয়ামতরাজি কখনও শেষ হবে না। তথায় হবে চিরস্থায়ী জীবন।
তথাকার অধিবাসীদের কাপড় কখনও পুরাতন হবে না।
তাদের যৌবন ক্ষয় হবে না।'
~~~
তিন ব্যক্তির প্রার্থনা অগ্রাহ্য হয় নাঃ
(১) ন্যায় বিচারক বাদশাহ,
(২) রোযাদার ব্যক্তি এবং
(৩) অত্যাচারিত ব্যক্তি।
তাদের প্রার্থনা মেঘে উঠিয়ে নেয়া হয় এবং ওর জন্যে আকাশের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং মহান আল্লাহ ঘোষণা করেনঃ
‘আমার মর্যাদার শপথ! কিছু সময় পরে হলেও আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করবো'। (মুসনাদ-ই-আহমাদ)
~~~
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ
“যে ব্যক্তি কোন পাপকার্য করার পর অযু করতঃ
দুই রাকাআত নামায আদায় করে এবং পাপের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে,
মহাসম্মানিত আল্লাহ তার পাপ মার্জনা করে দেন। (মুসনাদ-ই-আহমাদ)
~~~
সহীহ মুসলিমে রয়েছে,
আমীরুল মুমিনীন হযরত উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ
“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি পূর্ণভাবে অযু করতঃ (আরবী) অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল' পাঠ করে,
তার জন্যে জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হয়,
সে যেটা দিয়ে ইচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করবে।"
~~~
আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান (রাঃ) সুন্নাত অনুযায়ী অযু করেন অতঃপর বলেনঃ
“আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মুখে শুনেছি,
তিঁনি বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি আমার মত অযু করে, অতঃপর খাটি অন্তরে দু'রাকা'আত নামায আদায় করে, আল্লাহ তা'আলা তার পাপ মার্জনা করে দেন।"
(সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
___________[তফসীর ইবনে কাসির]________
0 Comments