Ad

📓 "আরবে'র মুশরিক নেতারাও গোপনে পবিত্র কুরআনে'র তিলাওয়াত শুনতো" 📓



""""""""""""""""""""""""""""""''"""""""""""""""""""""""""""""""""

'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, 

--------------------------------------------- 

ইসলাম ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে'র সবচাইতে বড় বড় শত্রু আবু জেহেল, আবু সুফিয়ান এবং আখনাস ইবনে শোরাইকও, 

লোক চক্ষুর অগোচরে কুরআন তিলাওয়াত শুনত, কুরআনের অসাধারণ বর্ণনাভঙ্গি এবং অনন্য রচনারীতির প্রভাবে তারাও প্রভাবান্বিত হতো।

------

আল্লামা সুয়ুতী রহিমাহুল্লাহু, বায়হাকী (রহিমাহুল্লাহু) এর উদ্ধৃতি দিয়ে, 'খুসায়েসে কুবরা' নামক গ্রন্থে লিখেছেন যে, 

------

একবার আবু জেহেল, আবু সুফিয়ান ও আখনাস ইবনে শোরাইক রাতের অন্ধকারে গোপনে, 

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর জবানিতে  কুরআন তিলাওয়াত শোনার উদ্দেশ্যে, 

ঘর থেকে বের হয়ে আসে এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম যেখানে কুরআন তিলাওয়াত করতেন, 

একে একে সবাই সেই বাড়ির আশেপাশে জমায়েত হয়ে আত্মগোপন করে, তিলাওয়াত শুনতে থাকে। 

------

এতে তারা এমন অভিভূত হয়ে পড়ে যে ,এ অবস্থাতেই রাত শেষ হয়ে যায়, ভোরে বাড়ি ফেরার পথে দৈবাৎ রাস্তায় পরস্পরের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়ে যায়, 

এবং সবাই সবার ব্যাপারে অবগত হয়ে একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে যে, তুমি খুবই অন্যায় করেছো ভবিষ্যতে আর যেন কেউ এমন কাজ করো না। 

কেননা, আরবের সাধারণ লোক এ ব্যাপারে জানতে পারলে সবাই মুসলমান হয়ে যাবে। 

পরস্পর এমন কথা বলাবলি করে, সবাই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেল। 

------

পরের রাতে পুনরায় তাদের কুরআন শোনার আগ্রহ জাগে এবং গোপনে প্রত্যেকেই এসে একই স্থানে সমবেত হয়। 

রাত শেষে প্রত্যাবর্তন কালে সাক্ষাৎ হলে, 

আবার একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে। তারপর থেকে তা বন্ধ করতে সবাই একমত পোষণ করে। 

------

কিন্তু তৃতীয় রাত্রেও তারা, কুরআন শোনার আগ্রহে পূর্বের মতই চলে যায়, রাত শেষে পুনরায় তাদের সাক্ষাৎ হয়, 

এবার তাঁরা সবাই বলে যে চলো, 

এবার আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই যে, আর কখনো এমন কাজ করবো না, এভাবেই তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে ফিরে আসে। 

------

পরদিন সকালে আখনাস ইবনে শোরাইক লাঠি হাতে নিয়ে প্রথমে, আবু সুফিয়ানের কাছে গিয়ে বলে যে, 

বল, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কালাম সম্বন্ধে তোমার কি অভিমত? 

আবু সুফিয়ান কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে শেষ পর্যন্ত কুরআনের সত্যতা স্বীকার করে নেয়। 

(আবু সুফিয়ান পরবর্তীতে বিদায় হজ্বের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে, মুসলমান হয়ে যায়)

------

অতঃপর আখনাস ইবনে সুরাইক আবু জেহেলের বাড়ি গিয়ে তাকেও একই প্রশ্ন করে। 

আবু জেহেল উত্তর দিল, পরিষ্কার কথা হচ্ছে যে, পূর্ব থেকেই আবদে-মানাফ গোত্রের সাথে আমাদের গোত্রের শত্রুতা চলে আসছে তারা কোন ব্যাপারে অগ্রসর হলে আমরা তাতে বাধা দেই। 

-

তারা বদান্যতার ক্ষেত্রে সাধারণের উপরে প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল, আমরা তাদের চাইতে অধিক দান খয়রাত করে এর মোকাবেলা করেছি। 

তারা সমগ্র জাতির অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছিল, এক্ষেত্রেও আমরা তাদের পেছনে থাকিনি। 

-

সমগ্র আরববাসী জানে এ দুটি গোত্র সমমর্যাদাসম্পন্ন, এমতাবস্থায় তাদের গোত্র থেকে ঘোষণা করা হলো যে, আমাদের বংশে একজন নবী জন্মগ্রহণ করেছেন। 

তার কাছে আল্লাহর কালাম আসে। 

-

সুতরাং আমাদের পক্ষে এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, এর মোকাবিলা আমরা কিভাবে করব। এই জন্যই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, কোনদিনও আমরা তার প্রতি ঈমান আনব না। 

--- 

এই হচ্ছে পবিত্র কুরআনের প্রকাশ্য মুজিযা, যা শত্রুরাও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। 

(খাসায়েসে-কুবরা) 

---

[মা'আরেফুল কোরআন, সুরা-বাকারা'র তফসীর থেকে, 

প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা- ১৫২/১৫৩/১৫৪]

Post a Comment

0 Comments