দুনিয়ার এ ক্ষনস্থায়ী জীবনে যারা ভোগ-বিলাস, ধন-সম্পদে আকৃষ্ট না হয়ে পরকালের জীবনকে স্মরণ করে তাদের জন্য চিরস্থায়ী ভোগ-বিলাসের ব্যবস্থা রয়েছে। আর যারা এ জগতের ভোগ-বিলাসে মাতোয়ারা তাদের জন্য রয়েছে সীমাহীন শাস্তি ও আজাব।
কুরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা এসব ঘোষণা তুলে ধরে মানুষকে সত্যের পথে ও মতে জীবন পরিচালনার আহ্বান করেছেন। সব মানুষকেই আল্লাহ তাআলা ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বুঝার যোগ্যতা দান করেছেন।
উভয় কাজের জন্যই আল্লাহ তাআলা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। নেককার ব্যক্তি যাবে জান্নাতে আর পাপী ব্যক্তি যাবে জাহান্নামে। এটা আল্লাহ পাকে ওয়াদা। আল্লাহ তাআলা তার ওয়াদা পূরণে বদ্ধপরিকর। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ঘোষণা করেন-
الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা কর। [ সুরা ইমরান ৩:১৬ ]
যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা কর। [ সুরা ইমরান ৩:১৬ ]
সুরা আল-ইমরানের ১৬নং আয়াতে আল্লাহ সেসব বান্দার কথা তুলে ধরেছেন, যারা ঈমানের স্বীকৃতি ও নিজেদের গোনাহ মাফের আবেদন করেছেন আল্লাহর কারছে। মুক্তি চেয়েছেন জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে।
আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাকে ওয়াদা দিয়েছেন, যারা আল্লাহর কাছে প্রয়োজনীয় জিনিস প্রার্থনা করে আল্লাহ তা তাদের দেবেন। শুধু দেবেন তা-ই নয়, তিনি প্রতি রাতে মুমিন বান্দাকে তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য আহ্বান করেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক রাতের যখন শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে তখন আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার কাছের আসমানে আসেন এবং আহ্বান করেন, আমি সবচেয়ে ক্ষমতাবান। কোনো দানপ্রার্থী আছে কি, আমি যাকে দান করবো? আছে কি কেউ ক্ষমাপ্রার্থী, যাকে আমি ক্ষমা করবো?’ (বুখারি ও মুসলিম)
উল্লেখিত আয়াতে সেসব বান্দার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় আমরা ঈমান এনেছি, আর এই ঈমানের বরকতে আমাদের গোনাহ মাফ করে দিন। আর দোজখের আজাব থেকেও আমাদের রক্ষা করুন।’
মুমিন বান্দারাও আল্লাহর শেখানো ভাষায় তার কাছে প্রার্থনা করেন। যেখাবে প্রার্থনা করেছেন সাহাবায়ে কেরাম।
হজরত হাতে রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাতের শেষ দিকে আমি শুনতে পেলাম, কোনো এক ব্যক্তি মসজিদের কোণে প্রার্থনা করে বলছে- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে যা আদেশ করেছ আমি তা পালন করেছি, আমাকে ক্ষমা কর। আমি দেখলাম তিনি হলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু।
আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি কুরআনে পাকে মুমিন বান্দার বৈশিষ্ট্য হিসেবে তুলে ধরেছেন। আর তা বাস্তবায়নের ওয়াদাও তিনি করেছেন। যারা তার নিয়মানুযায়ী চাহিদা পেশ করতে পারবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সে ব্যক্তির চাহিদা ওয়াদামতো পূরণ করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার সব চাহিদা পূরণে এবং আখেরাতের সফলতায় তার ঘোষণা অনুযাযী প্রার্থনার মাধ্যমে অর্জন করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।
আমিন।
0 Comments