[[হাদীস শরীফে শাবান মাসের বেশ কিছু ফযীলত ও করণীয় বর্ণিত হয়েছে। হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন,
ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺐ ﺍﻟﺸﻬﻮﺭ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﻥ ﻳﺼﻮﻣﻪ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻪ ﺑﺮﻣﻀﺎﻥ
“মাসগুলোর মধ্যে নবীজি (সা.) এর কাছে সর্বাধিক প্রিয় ছিল শাবান মাসে রোযা রাখা, অতঃপর রমযানে উপনীত হওয়া।” – বায়হাকী, হাদীস নং : ৮৬৯১
হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন,
ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ " ﻳﺼﻮﻡ ﺣﺘﻰ ﻧﻘﻮﻝ : ﻻ ﻳﻔﻄﺮ، ﻭﻳﻔﻄﺮ ﺣﺘﻰ ﻧﻘﻮﻝ : ﻻ ﻳﺼﻮﻡ، ﻓﻤﺎ ﺭﺃﻳﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﺳﺘﻜﻤﻞ ﺻﻴﺎﻡ ﺷﻬﺮ ﺇﻻ ﺭﻣﻀﺎﻥ، ﻭﻣﺎ ﺭﺃﻳﺘﻪ ﺃﻛﺜﺮ ﺻﻴﺎﻣﺎً ﻣﻨﻪ ﻓﻲ ﺷﻌﺒﺎﻥ
‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রোযা রাখতেন এমনকি আমরা মনে করতাম তিনি আর রোযা ভাঙবেন না। আবার তিনি রোযা রাখতেন না এমনকি আমরা মনে করতাম তিনি আর রোযা রাখবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে রমযান ব্যতীত আর কোনো সময় পূর্ণ মাসব্যাপী রোযা রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোযাও অন্য কোনো মাসে রাখত দেখিনি।’ –সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ১৯৬৯
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন,
ﻗِﻴﻞَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﺃَﻱُّ ﺍﻟﺼَّﻮْﻡِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺻَﻮْﻡُ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﺗَﻌْﻈِﻴﻤًﺎ ﻟِﺮَﻣَﻀَﺎﻥَ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺄَﻱُّ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺻَﺪَﻗَﺔٌ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ
“নবীজি (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন রোযার ফযীলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘রমযান মাসের সম্মানার্থে শাবান মাসে পালনকৃত রোযার ফযীলত বেশি। আবার জিজ্ঞাসা করা হলো- কোন দানের ফযীলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, রমযান মাসে প্রদত্ত দানের ফযীলত বেশি।” –বায়হাকী, হাদীস নং : ৮৭৮০
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,
ﺍﺣﺼﻮﺍ ﻫﻼﻝ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻟﺮﻣﻀﺎﻥ
“রমযান ঠিক রাখার জন্য শাবানের চাঁদ গণনা করো।” –তিরমিযী, হাদীস নং : ৬৮৭
হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন,
ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﺘَﺤَﻔَّﻆُ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻣَﺎ ﻻَ ﻳَﺘَﺤَﻔَّﻆُ ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِﻩِ ﺛُﻢَّ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻟِﺮُﺅْﻳَﺔِ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻓَﺈِﻥْ ﻏُﻢَّ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻋَﺪَّ ﺛَﻼَﺛِﻴﻦَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﺛُﻢَّ ﺻَﺎﻡَ
রাসূলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের হিসাব এতো গুরুত্ব সহকারে রাখতেন যে, অন্য কোন মাসের হিসাব ততোটা গুরুত্ব দিয়ে রাখতেন না। অতঃপর তিনি রমাযানের চাঁদ দেখেই রোযা পালন করতেন। আর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে তিনি শাবান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করতেন। এরপর রোযা রাখতেন।” –সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৩২৫
উপরোক্ত হাদিসগুলোর আলোকে শাবান মাসের মৌলিক তিনটি আমল প্রমাণিত হয়। সেগুলো হলো-
১. মনে-প্রাণে অধীর আগ্রহে রমযানের অপেক্ষা করতে থাকা।
২. যত বেশি সম্ভব শাবান মাসে রোযা রাখা। তবে ২৭ শাবানের পর রোযা রাখা যাবে না।
৩. শাবানের প্রতিদিন চাঁদের তারিখ মনে রাখা, ভুলে না যাওয়া। শাবানের চাঁদের তারিখ হিসাব করে রমযানের অপেক্ষা করা।
রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে শাবান ও আসন্ন ফযিলতের মৌসুম রমযানে বেশি বেশি ইবাদত করে তাঁর প্রিয়তা অর্জনের তাওফীক দান করুন। আমীন।
(সংগৃহীত)
0 Comments