(এই রাতের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ-সংশয় থাকবে না ইনশাআল্লাহ্)
.
** শবে বরাতের রাতটি কি বিশেষ কিছু? এটি কি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?
.
জ্বী, এই রাতটি ফযিলতপূর্ণ; এর বিশেষত্ব আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবান (১৪ তারিখ দিবাগত রাত, অর্থাৎ শবে বরাত)-এর রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষনকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।' (সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, শায়খ আলবানি, আরনাউত্ব, আওয়ামাসহ মুহাদ্দিসগণ হাদিসটি সহিহ বা হাসান বলেছেন)
.
[বি:দ্র: এটি একটি সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা, এই ক্ষমার জন্য ইবাদত শর্ত নয় - বলেছেন শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহ.,
** তবে কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে এই রাতে আমাদেরও উচিত নয় ঘুমিয়ে থাকা - বলেছেন কোন কোন আলিম]
.
** এই রাতের কি বিশেষ কোনো আমল আছে?
.
জ্বী না, সহীহ সনদে এই রাতের কোনো বিশেষ আমল নেই। তবে একাধিক দ্ব'ঈফ হাদীসে এসেছে, নফল সালাত, দু'আ ও কবর যিয়ারত করার কথা। মা'আরিফুল কুরআনের লেখক মুফতী শফী রহ. বলেন, আল্লাহর রাসূল যেহেতু জীবনে মাত্র একবার এই রাতে বাকী গোরস্তানে গিয়েছেন, তাই আমাদেরও একবারের অধিক, প্রতিবছর গোরস্তানে যাওয়া উচিত নয়। ("কীভাবে কাটাবেন মাহে রমযান"- মুফতি তাকি উসমানি)
.
** এই রাতে আমরা কী করব?
.
যেহেতু সহিহ হাদিস অনুসারে এই রাতটি ফযিলতপূর্ণ সেহেতু এই রাতে আমরা (১) নফল সালাত পড়তে পারি, (২) সুন্নাহসম্মত বিভিন্ন যিকর করতে পারি, (৩) দু'আ করতে পারি, (৪) রাসূল (সা.) এর উপর দরুদ পড়তে পারি (৫) তাওবাহ-ইস্তেগফার করতে পারি (৬) দান-সাদাকাহ্ করতে পারি। এসব নফল ইবাদত এই রাতে বৈধ ও মুস্তাহাব হওয়ার পক্ষে মুসলিম উম্মাহর প্রায় সকল আলেম একমত। শাফি'ঈ, আহমাদ, আওযায়ী, ইসহাক, ইবনে তাইমিয়া, ইমাম নববি, ইবনুস সলাহ, ইবনুল হাজ্জ, ইবনে রজব হাম্বলি, শায়খ আলবানি (রাহিমাহুমুল্লাহ)-সহ অনেক আলেম এই রাতের ফযিলতের কথা বলেছেন ও নফল ইবাদত বৈধ ও মুস্তাহাব হওয়ার কথা বলেছেন। (মাসিক আল কাউসার, শায়খ মাহবুব আরিফির নোট দ্রষ্টব্য)
রাতটির বিশেষত্ব আছে বলেই এ রাতে যেকোনো নফল ইবাদত করা যায়। তবে এগুলো সুন্নাত মনে করা যাবে না বা যারা এসব ইবাদত করবে না তাদেরকে নিন্দা করা যাবে না।
.
** শবে বরাতের কোনো রোযা আছে?
.
অত্যন্ত দুর্বল একটি হাদীসে এসেছে রোযার কথা। এজন্য এই রাতে রোযা রাখা সুন্নাত নয়। শবে বরাতের কোনো রোযা নেই। তবে যেহেতু নবীজি শাবান মাসে খুব বেশি পরিমাণে সিয়াম (রোযা) রাখতেন সেহেতু এই মাসে বেশি বেশি রোযা রাখা উত্তম। আর প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোযা রাখা তো সুন্নাত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রোযা রাখলে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু শবে বরাতের রোযা হিসেবে কোন রোযা রাখবেন না।
★★তাই যারা সিয়াম রাখতে চান তাঁরা (আগামীকাল ১৯/০৪/১৯ তারিখ দিন শেষে রাতে সাহরি খেয়ে) ২০, ২১ ও ২২ তারিখ-- মোট তিনটি সিয়াম রাখুন। কিন্তু এই নিয়ত রাখা যাবে না যে, এগুলো শবে বরাতের রোযা। প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখা সুন্নাত, সেই হিসেবে চলমান শাবান মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ ঈসায়ী হিসেবে ২০, ২১ ও ২২ তারিখ হয়। (মুফতী তাকী উসমানী সাহেবের লেখা অবলম্বনে)
.
[কিছু লোক দাবি করেছেন, তারা একদিন আগেই মুন্সীগঞ্জ এবং খাগড়াছড়িসহ বেশ কিছু স্থানে শাবান মাসের চাঁদ দেখেছেন। আল্লাহই ভালো জানেন। তাদের দাবী সত্য হলে একদিন আগে হিসাব করা হবে সবকিছু। তাদের দাবীর সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার একটা সুযোগ আসবে রমাদানের চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে। আপাতত জাতীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা মানাই যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ্। মাওলানা আবদুল মালেক (দা.বা.) জাতীয় সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছেন।]
.
** এই রাত কি ভাগ্যরজনী?
.
এই রাত ভাগ্যরজনী নয়। ভাগ্যরজনী হলো, লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। প্রয়োজনে দেখুনঃ সূরা আল কদরের তাফসীর, যেকোনো তাফসীরগ্রন্থ থেকে।
[শব্দটি মূলত শবে "বরাত" না, শবে "বারাআত"। বারাআত মানে মুক্তি। যেহেতু এই রাতে মুক্তির সুসংবাদ এসেছে তাই এই নাম]
.
** এই রাতে কি হালুয়া-রুটি করা ভালো?
.
জ্বী না। বরং এটি একটি নিকৃষ্ট প্রথা, যা আমাদের সমাজে চালু হয়েছে। তেমনি হৈ-হুল্লোড়, আতশবাজি ফুটানো, মাসজিদে জমায়েত হওয়া -- এগুলো খুবই বাজে প্রথা। যা কোনো হাদীসেই নেই।
.
** এই রাতে গোসলের কোনো ফযিলত আছে?
.
না, এটি একটি বাজে প্রথা। এই রাতে গোসলের কথা হাদিসে আসেনি। কেউ সুন্নাত মনে করে এই রাতে গোসল করলে সেটি হবে বিদ'আত (দ্বীনে নবআবিষ্কার)।
.
এই রাতের আমল হবে একাকী, সম্মিলিত নয়। এই রাতে বিশেষ সূরা বা বিশেষ বাক্য দিয়ে যেসব নামাযের কথা বলা হয় সেগুলো ভিত্তিহীন, বানোয়াট।
.
(মুফতি তাকী উসমানী, মাওলানা আবদুল মালেক, শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহ.), শায়খ আবদুল কাইয়ুম, মুহাদ্দিস মাহবুবুল হাসান আরিফি-- প্রমূখ আলেমদের লিখনী ও লেকচার থেকে সংক্ষেপিত)
.
** শবে বরাতের রাতটি কি বিশেষ কিছু? এটি কি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?
.
জ্বী, এই রাতটি ফযিলতপূর্ণ; এর বিশেষত্ব আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবান (১৪ তারিখ দিবাগত রাত, অর্থাৎ শবে বরাত)-এর রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষনকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।' (সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, শায়খ আলবানি, আরনাউত্ব, আওয়ামাসহ মুহাদ্দিসগণ হাদিসটি সহিহ বা হাসান বলেছেন)
.
[বি:দ্র: এটি একটি সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা, এই ক্ষমার জন্য ইবাদত শর্ত নয় - বলেছেন শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহ.,
** তবে কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে এই রাতে আমাদেরও উচিত নয় ঘুমিয়ে থাকা - বলেছেন কোন কোন আলিম]
.
** এই রাতের কি বিশেষ কোনো আমল আছে?
.
জ্বী না, সহীহ সনদে এই রাতের কোনো বিশেষ আমল নেই। তবে একাধিক দ্ব'ঈফ হাদীসে এসেছে, নফল সালাত, দু'আ ও কবর যিয়ারত করার কথা। মা'আরিফুল কুরআনের লেখক মুফতী শফী রহ. বলেন, আল্লাহর রাসূল যেহেতু জীবনে মাত্র একবার এই রাতে বাকী গোরস্তানে গিয়েছেন, তাই আমাদেরও একবারের অধিক, প্রতিবছর গোরস্তানে যাওয়া উচিত নয়। ("কীভাবে কাটাবেন মাহে রমযান"- মুফতি তাকি উসমানি)
.
** এই রাতে আমরা কী করব?
.
যেহেতু সহিহ হাদিস অনুসারে এই রাতটি ফযিলতপূর্ণ সেহেতু এই রাতে আমরা (১) নফল সালাত পড়তে পারি, (২) সুন্নাহসম্মত বিভিন্ন যিকর করতে পারি, (৩) দু'আ করতে পারি, (৪) রাসূল (সা.) এর উপর দরুদ পড়তে পারি (৫) তাওবাহ-ইস্তেগফার করতে পারি (৬) দান-সাদাকাহ্ করতে পারি। এসব নফল ইবাদত এই রাতে বৈধ ও মুস্তাহাব হওয়ার পক্ষে মুসলিম উম্মাহর প্রায় সকল আলেম একমত। শাফি'ঈ, আহমাদ, আওযায়ী, ইসহাক, ইবনে তাইমিয়া, ইমাম নববি, ইবনুস সলাহ, ইবনুল হাজ্জ, ইবনে রজব হাম্বলি, শায়খ আলবানি (রাহিমাহুমুল্লাহ)-সহ অনেক আলেম এই রাতের ফযিলতের কথা বলেছেন ও নফল ইবাদত বৈধ ও মুস্তাহাব হওয়ার কথা বলেছেন। (মাসিক আল কাউসার, শায়খ মাহবুব আরিফির নোট দ্রষ্টব্য)
রাতটির বিশেষত্ব আছে বলেই এ রাতে যেকোনো নফল ইবাদত করা যায়। তবে এগুলো সুন্নাত মনে করা যাবে না বা যারা এসব ইবাদত করবে না তাদেরকে নিন্দা করা যাবে না।
.
** শবে বরাতের কোনো রোযা আছে?
.
অত্যন্ত দুর্বল একটি হাদীসে এসেছে রোযার কথা। এজন্য এই রাতে রোযা রাখা সুন্নাত নয়। শবে বরাতের কোনো রোযা নেই। তবে যেহেতু নবীজি শাবান মাসে খুব বেশি পরিমাণে সিয়াম (রোযা) রাখতেন সেহেতু এই মাসে বেশি বেশি রোযা রাখা উত্তম। আর প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোযা রাখা তো সুন্নাত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রোযা রাখলে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু শবে বরাতের রোযা হিসেবে কোন রোযা রাখবেন না।
★★তাই যারা সিয়াম রাখতে চান তাঁরা (আগামীকাল ১৯/০৪/১৯ তারিখ দিন শেষে রাতে সাহরি খেয়ে) ২০, ২১ ও ২২ তারিখ-- মোট তিনটি সিয়াম রাখুন। কিন্তু এই নিয়ত রাখা যাবে না যে, এগুলো শবে বরাতের রোযা। প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখা সুন্নাত, সেই হিসেবে চলমান শাবান মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ ঈসায়ী হিসেবে ২০, ২১ ও ২২ তারিখ হয়। (মুফতী তাকী উসমানী সাহেবের লেখা অবলম্বনে)
.
[কিছু লোক দাবি করেছেন, তারা একদিন আগেই মুন্সীগঞ্জ এবং খাগড়াছড়িসহ বেশ কিছু স্থানে শাবান মাসের চাঁদ দেখেছেন। আল্লাহই ভালো জানেন। তাদের দাবী সত্য হলে একদিন আগে হিসাব করা হবে সবকিছু। তাদের দাবীর সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার একটা সুযোগ আসবে রমাদানের চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে। আপাতত জাতীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা মানাই যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ্। মাওলানা আবদুল মালেক (দা.বা.) জাতীয় সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছেন।]
.
** এই রাত কি ভাগ্যরজনী?
.
এই রাত ভাগ্যরজনী নয়। ভাগ্যরজনী হলো, লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। প্রয়োজনে দেখুনঃ সূরা আল কদরের তাফসীর, যেকোনো তাফসীরগ্রন্থ থেকে।
[শব্দটি মূলত শবে "বরাত" না, শবে "বারাআত"। বারাআত মানে মুক্তি। যেহেতু এই রাতে মুক্তির সুসংবাদ এসেছে তাই এই নাম]
.
** এই রাতে কি হালুয়া-রুটি করা ভালো?
.
জ্বী না। বরং এটি একটি নিকৃষ্ট প্রথা, যা আমাদের সমাজে চালু হয়েছে। তেমনি হৈ-হুল্লোড়, আতশবাজি ফুটানো, মাসজিদে জমায়েত হওয়া -- এগুলো খুবই বাজে প্রথা। যা কোনো হাদীসেই নেই।
.
** এই রাতে গোসলের কোনো ফযিলত আছে?
.
না, এটি একটি বাজে প্রথা। এই রাতে গোসলের কথা হাদিসে আসেনি। কেউ সুন্নাত মনে করে এই রাতে গোসল করলে সেটি হবে বিদ'আত (দ্বীনে নবআবিষ্কার)।
.
এই রাতের আমল হবে একাকী, সম্মিলিত নয়। এই রাতে বিশেষ সূরা বা বিশেষ বাক্য দিয়ে যেসব নামাযের কথা বলা হয় সেগুলো ভিত্তিহীন, বানোয়াট।
.
(মুফতি তাকী উসমানী, মাওলানা আবদুল মালেক, শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহ.), শায়খ আবদুল কাইয়ুম, মুহাদ্দিস মাহবুবুল হাসান আরিফি-- প্রমূখ আলেমদের লিখনী ও লেকচার থেকে সংক্ষেপিত)
0 Comments