Ad

আল কোরআনের ১১৪ সূরার ১০০০ আয়াত, তাফসিরে ইবনে কাছির, সিহাহ সিত্তাহ ও বিবিধ হাদিসে হানাফী মাযহাবের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ (পর্ব-২৫৮)

 





সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-

১। হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের ওয়াদাগুলো পালন কর। তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে, তবে যেগুলো হারাম হওয়া সম্পর্কে তোমাদের উপর পবিত্র কোরআনের আয়াতগুলো নাযিল হয়েছে সেগুলো ছাড়া।আর ইহরাম অবস্থায় তোমাদের শিকার করা জন্তুগুলো হালাল নয়।নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর ইচ্ছেমত আদেশ করে থাকেন।  


সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ১ নং আয়াতের তাফসির - তাফসিরে ইবনে কাছির

১। যারা আল্লাহর সাথে ওয়াদায় আবদ্ধ হওয়ার পর তা’ ভঙ্গ করে।যে সব সম্পর্ক আল্লাহ তা’আলা অক্ষুণ্ন রাখতে বলেছেন তা’ ছিন্ন করে। জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ। আর তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট বাসস্থান। (সূরা রা’দ: ২৫ নং আয়াত)


* রুহের জগতেই বান্দা আল্লাহকে তাদের রব স্বীকার করেছে। কাজেই আল্লাহর সাথে বান্দার ওয়াদা হলো ইবাদতের ওয়াদা। বান্দা ইবাদত না করলেই আল্লাহর সাথে তার ওয়াদা ভঙ্গ হয়। কবরেও বান্দাকে জিজ্ঞাস করা হবে তার রব কে? ইবাদত না করলেই তখন সে রবের নাম বলতে পারবে না। আর তখনই তার আযাব শুরু হয়ে যাবে। সংগত কারণে বান্দার জন্য রবের ইবাদতের বিকল্প নেই।রবের ইবাদত হতে হয় তাঁর রাসূলের (সা.) তরিকায়। 


# রাসূলের (সা.) আনুগত্য ও অনুসরন


সূরাঃ ৩৩ আহযাব, ৩৬ নং আয়াতের অনুবাদ-

৩৬। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেহ আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।


সূরাঃ ৪ নিসার ৮০ নং আয়াতের অনুবাদ-

৮০। কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিলে আমরা তোমাকে তাদের উপর হেফাজতকারী হিসেবে প্রেরণ করিনি (এ অপরাধের শাস্তি থেকে তুমি তাদেরকে হেফাজত বা রক্ষাকরতে পারবে না)। 


# সূরাঃ ৩৩ আহযাবের ২১ নং আয়াতের অনুবাদ-

২১। তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। 


সূরাঃ ৪ নিসা, ৬৫ নং আয়াতের অনুবাদ-

৬৫। কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার উপর অর্পণ না করে: অতঃপর

সূরাঃ ৪ নিসার ১১৫ নং আয়াতের অনুবাদ-

১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরন করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সেদিকেই  তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব। আর তা’কত মন্দ আবাস।


সূরাঃ ৩ আলে ইমরান ৩১ নং আয়াত ও ৩২ নং আয়াতের অনুবাদ-

৩১। বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে আমাকে অনুসরন কর, আল্লাহ তোমাদিগকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরমদয়ালু। 

৩২। বল, আল্লা ও রাসুলের অনুগত হও। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রাখ আল্লাহতো কাফেরদেরকে পছন্দ করেন না।


সূরাঃ ৪ নিসা, ১৬৫ নং আয়াতের অনুবাদ-

১৬৫। সুসংবাদ দাতা ও সাবধানকারী রাসূল প্রেরণ করেছি, যাতে রাসূল আসার পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোন অভিযোগ না থাকে। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।  


সূরাঃ ৮ আনফাল, ৪৬ নং আয়াতের অনুবাদ-

৪৬। তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না।করলে তোমরা সাহস হারাবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে।তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।


সূরাঃ ২৪ নূর, ৫২ নং আয়াতের অনুবাদ-

৫২। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম। 


সূরাঃ ২৪ নূর, ৫৬ নং আয়াতের অনুবাদ-

৫৬। তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা রহমত পেতে পার।


সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১১৫ এর অনুবাদ-

১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্যপথ অনুসরন করে, তবে সে যে দিকে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস।


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৯২ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-

৩৯৯২। আউফ ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইয়াহুদী জাতি একাত্তরটি দলে বিভক্ত হয়েছিল। তারমধ্যে সত্তরটিদল জাহান্নামী এবং একটি দল জান্নাতি। আর খ্রিস্টান জাতি বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল তাদের মধ্যে একাত্তর দল জাহান্নামী এবং একটিমাত্র দল জান্নাতী। সেই সত্তার শপথ,যাঁর হাতে মুহাম্মদের (সা.) প্রাণ, অবশ্যই আমার উম্মত তিহাত্তরটি দলে বিভক্ত হবে। তারমধ্যে একটি দল জান্নাতী এবং বাহাত্তরটি হবে জাহান্নামী।আরয করা হলো, আল্লাহর রাসূল (সা.) কোন দলটি জান্নাতী? তিনি বললেন, একতাবদ্ধ যারা সুন্নতের উপর অটল থাকবে। 


* একত্রিত অবস্থায় রাসূলের (সা.) সুন্নাতের অনুসারী হয়ে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। আর একত্রিত হয়ে আল্লাহর ইবাদত করা এটা আল্লাহরও আদেশ।


সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-

১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি তোমাদের অন্তরে প্রীতি সঞ্চার করেছেন, ফলে তাঁর দয়ায় তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।তোমরাতো অগ্নি কুন্ডের প্রান্তে ছিলে, আল্লাহ উহা হতে তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃতকরেন যাতে তোমরা সৎপথ পেতে পার।


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-

৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।


* মতভেদ হলে উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের সাথে একত্রিত থেকে আল্লাহর ইবাদত করতে হয়।


সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-

১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।


সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৯ এর অনুবাদ-

১৫৯। যারা দীন সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়। তাদের ব্যবস্থ্যা করার দায়িত্ব আল্লাহর।আল্লাহ তাদেরকে তাদের কাজ সম্পর্কে জানিয়ে দিবেন।


সূরাঃ ১০ ইউনুস, ১৯ নং আয়াতের অনুবাদ-

১৯। মানুষ ছিল একই উম্মত। পরে উহারা মতভেদ সৃষ্টি করে।তোমার প্রতিপালকের পূর্ব-ঘোষণা না থাকলে তারা যে বিষয়ে মতভেদ ঘটায় তার মিমাংসাতো হয়েই যেত।


সূরাঃ ২৩ মুমিনূন, ৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-

৫৩। কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যে তাদের দীনকে বহুভাগে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেক দলই তাদের নিকট যা আছে তা নিয়ে আনন্দিত।


সূরাঃ ৩০ রূম, ৩২ নং আয়াতের অনুবাদ-

৩২। যারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে। প্রত্যেক দল নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উৎফুল্ল।


সূরাঃ ৪৩ যুখরুফ, ৬৫ নং আয়াতের অনুবাদ-

৬৫। অতঃপর তাদের বিভিন্ন দল মতানৈক্য সৃষ্টি করলো, সুতরাং সুতরাং যালিমদের জন্য দূর্ভোগ ভয়ংকর শাস্তির দিনে।


* ইবাদতের ক্ষেত্রে উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের সাথে মতভেদ করতে হয় না। তাদের থেকে আলাদা দল তৈরী করতে হয় না।


সূরাঃ ২১ আম্বিয়া, ৭৮ নং ও ৭৯ নং আয়াতের অনুবাদ-

৭৮। আর স্মরণ কর দাউদ ও সুলায়মানের কথা, যখন তারা বিচার করতেছিল শস্যক্ষেত্র সম্পর্কে, তাতে রাত্রিকালে প্রবেশ করেছিল কোন সম্প্রদায়ের মেষ; আমরা প্রত্যক্ষ করতেছিলাম তাদের বিচার। 

৭৯। আর আমরা এ বিষয়ে সুলায়মানকে মীমাংসা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাদের প্রত্যেককে আমরা দিয়ে ছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান। আমরা পর্বত ও পাখীদেরকে অধীন করে দিয়েছিলাম, উহারা দাউদের সঙ্গে আমাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতো; আমরাই ছিলাম এ সমস্তের কর্তা।


* ইবাদতের ক্ষেত্রে উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের সাথে মতভেদের মীমাংসা করে ফেলতে হয়।


সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-

১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।

* ইবাদতের ক্ষেত্রে উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের অভিন্ন পথে না চলে বিভিন্ন পথে চলতে হয় না।


সূরাঃ ৫ মায়িদা, ৫৬ নং আয়াতের অনুবাদ-

৫৬। কেউ আল্লাহ, তাঁর রাসুল এবং মু’মিনদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে আল্লাহর দলইতো বিজয়ী হবে। 


সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-

১৩৯। তোমরা হীন বল হবে না এবং দুঃখিত হবে না। তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।


সূরাঃ ৪৮ ফাতহ, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-

১। নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়।


সূরাঃ ৯ তাওবা, ৩৩ নং আয়াতের অনুবাদ-

৩৩। মুশরিকরা অপ্রীতিকর মনে করলেও অপর সমস্ত দীনের উপর জয়যুক্ত করার জন্য তিনিই হেদায়েত ও সত্য দীনসহ তাঁর রাসুল পাঠিয়েছেন।


সূরাঃ ৪৮ ফাতহ, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-

২৮। তিনিই তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও দীনে হক (সত্যদীন) সহ প্রেরণ করেছেন অপর সমস্ত দীনের উপর ইহাকে জয়যুক্ত করার জন্য। আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।


সূরাঃ ৫৮ মুজাদালা, ১৪ নং আয়াতের অনুবাদ-

২০। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা হবে চরম লাঞ্চিতদের অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ সিদ্ধান্ত করেছেন, আমি অবশ্যই বিজয়ী হব এবং আমার রাসূলগণও। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।


সূরাঃ ১১০ নাসর, ১ নং থেকে ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-

১। যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে। 

২। আর তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে।

৩। তখন তুমি তোমার রবের হামদ এর তাসবিহ পাঠ করবে, আর তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি তো তওবা কবুলকারী। 


* আল্লাহ তাঁর বান্দাদের বিজয় চান। কারণ এমন হলে দলে দলে লোক আল্লাহর দীনে প্রবেশ করে।


সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-

৩৯। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহতো এর দর্শক।


সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬০ নং আয়াতের অনুবাদ-

৬০। তোমরা তাদের মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে, এছাড়া অন্যদেরকে যাদের সম্পর্কে তোমরা জাননা, আল্লাহ জানেন।আল্লাহর পথে তোমরা যা ব্যয় করবে এর পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।


* বিজয়ের জন্য যুদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধ করতে হলে এর জন্য প্রস্তুতি লাগবে।


সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬৫ ও ৬৬ নং আয়াতের অনুবাদ-

৬৫। হে নবি! মু’মিন দিগকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ কর। তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশতজন উপর বিজয়ী হবে।তোমাদের মধ্যে একশত জন থাকলে এক হাজার কাফিরের উপর জয়ী হবে।কারণ তারা বোধশক্তিহীন সম্প্রদায়।

৬৬। আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন।তিনিতো অবগত আছেন যে তোমাদের মধ্যে দূর্বলতা আছে।সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশত জন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশতজন উপর বিজয়ী হবে।তোমাদের মধ্যে এক হাজার থাকলে আল্লাহর অনুমতিক্রমে তারা দুই হাজারের উপর বিজয়ী হবে।আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। 


* যুদ্ধ জয়ে ১০% লোক তো লাগবেই। এক তৃতীয়াংশ লোকবল আরো বেশী নিরাপদ।  সেজন্যই শয়তান মুসলিমদেরকে ৭৩ দলে বিভক্ত করেছে যেন তারা বিজয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লোক বল সংগ্রহ করতে না পারে।


সূরাঃ ৩৪ সাবা, ২০ নং আয়াতের অনুবাদ-

২০। তাদের সম্বন্ধে ইবলিশ তার ধারনা সত্য প্রমাণ করল। ফলে তাদের মধ্যে একটি মুমিন দল ব্যতীত সকলেই তার অনুসরন করল।


* কোন মুমিন দলটি ইবলিশের অনুসারী হয়নি?


সহিহ আবু দাউদ, ৪২০৬ নং হাদিসের (ফিতনা-ফ্যাসাদ অধ্যায়) অনুবাদ-

৪২০৬। হযরত আবু মালেক আশয়ারী (র.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তিন ধরনের ফিতনা থেকে বাঁচিয়েছেন। যথাঃ ১। তোমাদের নবি তোমাদের জন্য বদদোয়া করবেন না, যাতে তোমরা এক সাথে ধ্বংস হয়ে যাবে।২। বাতিলের অনুসারীরা কখনোই হকের অনুসারীদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না। এবং ৩। তোমরা সবাই একসাথে পথভ্রষ্ট হবে না। 


* হানাফীদের গঠিত হওয়ার পর থেকে তেরশ বছরের বেশী সময় ধরে অহানাফীরা হানাফীদের উপর জয়ী হতে পারেনি। সংগত কারণে ইবলিশের অনুসারী হয়নি হকপন্থী হানাফী। সেজন্য আল্লাহ তাদের উপর খুশী হয়ে তাদের হাতে কল্যাণের চাবী তুলে দিয়েছেন।


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩৭ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-

২৩৭। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই কতক লোক আছে, যারা কল্যাণের চাবিকাঠি এবং অকল্যাণের দ্বার রুদ্ধকারী। পক্ষান্তরে নিশ্চয়ই কতক লোক আছে, যারা অকল্যাণের দ্বার উন্মোচনকারী এবং কল্যাণের দ্বার রুদ্ধকারী। আর সেই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যার হাতে আল্লাহ কল্যাণের চাবি রেখেছেন।আর ধ্বংস তার জন্য যার উভয় হাতে আল্লাহ অকণ্যাণের চাবি রেখেছেন। 


* আব্বাসীয় হানাফী খলিফাগণ ও অটোমান হানাফী সুলতানগণ বারশত বছর মুসলিমদের জন্য কল্যাণের চাবিকাঠি  এবং অকল্যাণের দার রুদ্ধকারী ছিল। তখন তারা ছিল বিশ্ব নিয়ন্ত্রক। তখন মুসলিমদের উপর অমুসলিমরা চড়াও হতে ভয় পেত। হানাফী বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ বিলুপ্ত হওয়ার পরেই অমুসলিমরা মুসলিমদের উপর চড়াও হতে শুরু করে। এমনকি পরাশক্তি রাশিয়া হানাফী ঘাটি আফগানদেরকে হামলাকরে বসে। অবশেষে তারা আফগান হানাফীদের সাথে বাজেভাবে হেরেগেছে। পরাশক্তি আমেরিকাও আফগানদেরকে হামলা করে অবশেষে তাদের সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হয়েছে। আর এখন আল্লাহর প্রথম শর্তের বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০% হানাফীদের আছে। কিন্তু ধৈর্যে ঘাটতির কারণে তাদেরকে আল্লাহর দ্বিতীয় শর্ত পূরণ করতে হবে। আর তা’ হলো তাদের লোক বল হতে হবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার একতৃতীয়াংশ। 


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪০৮৪ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-

৪০৮৪। হযরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের একটি খনিজ সম্পদের নিকট তিনজন নিহত হবেন। তাদের প্রত্যেকেই হবেন খলিফার পুত্র। এরপর সেই ধনাগার তাদের কেউ পাবেন না। প্রাচ্য দেশ থেকে কালো পতাকা উড্ডীন করা হবে । তারা তোমাদের এমনভাবে হত্যা করবে, যেমনটি ইতিপূর্বে কোন জাতি করেনি। অতঃপর তিনি আরো কিছু উল্লেখ করেছিলেন, যা আমার মনে নেই। আর তিনি এও বললেন, যখন তোমরা তাঁকে দেখতে পাবে, তখন তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করবে, যদিও তোমাদের বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে অতিক্রম করতে হয়। কেননা তিনি আল্লাহর খলিফা মাহদী। 


* ইমাম মাহদীকে (আ.) মুসলিমদের সাথেও লড়তে হবে। কাজেই এ ক্ষেত্রে মোট মুসলিম হিসাব কোন কাজের কথা নয়।যেহেতু ইমাম মাহদী (আ.) আসার অনেক আলামত এর মধ্যে প্রকাশ হয়েগেছে সেহেতু হানাফীদের মধ্য হতে আসলেই ইমাম মাহদী নিকট সময়ে আসবেন। আর ইমাম মাহদীর(আ.) বিশ্ব জয়ের সহায়ক হিসাবে হানাফী এর মধ্যে সারা বিশ্বে পৌঁছে গেছে।  আর নবির দেশের লোকদেরকে ইমাম মাহদী (আ.) পাইকারী হত্যা করবেন তারা হানাফী নয় বলেই। কারণ তারা হানাফী মাহদীকে (আ.) বাধা দিবেই। আর সে বাধা সরাতেই তাঁকে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।


সহিহ তিরমিযী, ২২১৫ নং হাদিসের (কলহ ও বিপর্যয় অধ্যায়) অনুবাদ-

২২১৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, খোরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীগণ বের হবে (মাহদীর সমর্থনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বায়তুল মাকদিস) এ স্থাপিত হবে এবং কোন কিছুই তা’প্রতিহত করতে পারবে না।


* খোরাসানের দিকে যে এলাকা সে এলাকার পুরোটাই হানাফীদের এলাকা। রাশিয়া, চিন, ভারত, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় হানাফী মুসলিমদের আখড়া। এ অঞ্চলের অমুসলিমরা ব্যাপকহারে হানাফী মুসলিম হয়ে ইমাম মাহদীর (আ.) সহযাত্রী হলে তাদেরকে কেউ আর কিভাবে প্রতিহত করবে? 


সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-

৩১৭৭। হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে হিন্দুস্থানের যুদ্ধের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি তা’ পেলে তাতে আমার জান মাল উৎসর্গ করব। আর আমি যদি নিহত হই তবে মর্যাদাবান শহীদ বলে গণ্য হব, আর যদি প্রত্যাবর্তন করি, তাহলে আমি আবু হুরায়রা হব আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত। 


সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-

৩১৭৮। হযরত রাসূলুল্লাহর (সা.)গোলাম সাওবান (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমার উম্মতের দু’টি দল, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জাহান্নাম হতে নাজাত দান করেছেন, একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে আর একদল যারা ঈসা ইবনে মরিয়মের সাথে থাকবে। 


* তরাইনের দ্বিতীয় ও পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ হয়েছে আফগান হানাফী ও ভারতীয় হিন্দুদের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আফগান হানাফীদের সহায়ক ছিল মোগল হানাফীরা।যা মোগল ও আফগান হানাফীদেরকে মহানবির (সা.) উম্মত সাব্যস্ত করে। ভারতে সামনে হিন্দুদের সাথে যুদ্ধ হলেও তাও হানাফীদের সাথেই হবে। সংগত কারণে  সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিস ও সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিস দ্বারা অহানাফী কোন দলকে সঠিক সাব্যস্ত করার কোন সুযোগ নেই।


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৬ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-

২৭৭৬। আনাস ইবনে মালেকের (রা.) খালা এবং মহানবির (সা.) দুধ খালা উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! কে আপনাকে হাসালো? তিনি বললেন, আমার উম্মতের কতক লোককে আমার নিকট এমন অবস্থায় পেশ করা হয়েছে যে, তারা এই সমূদ্রের উপর সওয়ার হয়েছে, যেমনভাবে বাদশাহ সিংহাসনে আরোহন করে। উম্মু হারাম বললেন, তিনি তাঁরজন্য দোয়া করলেন। এরপর পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন।  অতঃপর প্রথম বারের ন্যায় জাগ্রত হলেন। তারপর উম্মু হারাম (রা.) অনুরূপ বললেন, রাসূলও (সা.) প্রথমবারের অনুরূপ জবাব দিলেন। উম্মু হারাম (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভূক্ত থাকবে। আনাস (রা.) বলেন, অতঃপর তিনি তাঁর স্বামী উবাদা ইবনে সামিতের (রা.) সাথে বের হলেন জিহাদ করার জন্য, যখন মুসলিমগণ মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের সাথে সর্ব প্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা করে। অতঃপর তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করলেন তখন সওয়ার হওয়ার জন্য তাঁর কাছে একটা জন্তুযান  আনা হলো। জন্তুযানটি তাকে ফেলে দিল। এতেই তিনি ইন্তিকাল করলেন।  


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-

২৭৭৮। হযরত আবু উমামা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি যে, নৌ-পথের যুদ্ধের একজন শহীদ স্থলপথে দুইজন শহীদের সমান, আর নৌ যুদ্ধে যার মাথা ঘুরবে সে সেই ব্যক্তির মত স্থলপথে যে নিহত হয়। আর দুই ঢেউয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব অতিক্রমকারী আল্লাহর আনুগত্যে পৃথিবী সফরকারীর সমান। আল্লাহ মৃত্যুর ফেরেশতাকে সকলের জান কবয করার দায়িত্ব প্রদান করেছেন, নৌ যুদ্ধের শহীদের জান ব্যতীত। কেননা আল্লাহ নিজেই তাদের রুহ নিয়ে নেন। স্থলপথের শহীদের সকল গুনাহ তিনি ক্ষমা করে দেন ঋণ ব্যতীত, আর নৌ যুদ্ধের শহীদের সকল গুনাহ এবং ঋণও তিনি ক্ষমা করে দেন।


* নৌ-যুদ্ধে শত শত বছর সমূদ্রে রাজত্ব করেছে অটোমান হানাফীরা। সংগত কারণে তারা আল্লাহর বিশেষ বান্দা হিসেবে সাব্যস্ত।


# কোরআন ও হাদিস হানাফী মাযহাবের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা আব্বাসীয় খলিফাগণকে সঠিক সাব্যস্ত করে।


সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-

১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি  বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-

৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।


* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মান্যতায় ৫৩ জন আব্বাসীয় খলিফা হযরত ইব্রাহীমের বংশীয় মুসলিমদের বিশ্ব ইমাম হিসাবে সঠিক ছিলেন। হানাফী অমান্যতায় এ তালিকা থেকে তিনজন খলিফা বাদ পড়েছেন। তাদের অমান্যতার কারণ তারা জালিম ছিলেন। 


সহিহ আল বোখারী, ৩২৪৭ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-

৩২৪৭।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন, এ দায়িত্ব (মুসলিম নেতৃত্বের) চিরকাল কুরাইশদের হাতেই থাকবে। যতদিন তাদের দু’জন লোক অবশিষ্ট থাকবে। 


* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মান্যতায় ৫৩ জন আব্বাসীয় খলিফা কুরাইশ বংশীয় মুসলিমদের বিশ্ব আমির হিসাবে সঠিক ছিলেন।


সহিহ আল বোখারী, ৩৪৪২ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-

৩৪৪২। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। যখন অভাব অনটন দেখা দিত তখন ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের উছিলায় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন হে মাবুদ! আমরা আমাদের নবির (সা.) উছিলায় তোমার নিকট প্রার্থনা করতাম যে, তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর তখন প্রবল বর্ষণ করতে। এখন আমরা আমাদের নবির চাচা আব্বাসের (রা.) উছিলায় প্রার্থনা করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন ভারী বর্ষণ শুরু হত।


* উছিলায় হযরত আব্বাস (রা.) ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ব্যক্তি এবং তাঁর বংশের খলিফাগণ ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ইসলামী নেতা। 


সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-

৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।


রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ – মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।


* আব্বাসীয়গণ মহানবির (সা.) দোয়ায় খলিফা হওয়ায় তারা মুসলিম বিশ্ব আমির হিসেবে সঠিক ছিলেন।  


সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৪১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-

১৪১। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন যেমন প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন ইব্রাহীমকে (আ.)। কিযামতের দিন জান্নাতে আমার ও ইব্রাহীমের আসন সমানা-সামনি হবে। আর আব্বাস (রা.) আমাদের দুই বন্ধুর মাঝখানে একজন মুমিন হিসেবে অবস্থান করবেন।


মেশকাত ৫৮৯৭ নং হাদিসের (সাহাবীদের ফজিলত ও মর্যাদা  অধ্যায়) অনুবাদ-

৫৮৯৭। হযরত ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)ইরশাদ করেন, আব্বাস (রা.) আমার সঙ্গে জড়িত এবং আমি তার সাথে জড়িত।


* সংগত কারণে আব্বাসীয় খলিফাগণের ৫৩ জন যারা মুসলিম বিশ্বের আমির সাব্যস্ত তাদের সাথে মহানবি (সা.) জড়িত। মহানবি (সা.) যাদের সাথে জড়িত তারা অবশ্যই সঠিক ছিলেন। 


# মুসলিমদের এক দল সব সময় সঠিক থাকবে। তো আব্বাসীয়, অটোমান, মোগল ও আফগান মিলে হানাফীরা একাধারে সঠিক সাব্যস্ত হয়ে আসছে। তখন যারা সঠিক সাব্যস্ত হয়নি তারা আর সঠিক সাব্যস্ত হবে কেমন করে? হানাফীরাইতো তাদের সঠিকতায় ছেদ চিহ্ন বসিয়ে দিল। আর এত কাল সঠিক থাকার কারণে সামনেও তাদের আর বেঠিক হওয়ার সুযোগ নেই।

সহিহ বোখারী ৬৯ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-

৬৯। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। হযরত নবি করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা সহজ পথ অবলম্বন কর, কঠিন করে তুলবে না এবং সুখবর দাও। বিরক্তি-অস্বস্তি সৃষ্টি করবে না।


* হাদীসে দ্বীন সহজ বলা হয়েছে। হানাফী মাযহাব পালনের জন্য খুব সহজ। সংগত কারণে শুধুমাত্র হানাফী মাযহাব দীন। হানাফী মাযহাব ছাড়া অন্য কিছু দীন নয়।

হানাফী মাযহাব সারা বিশ্বের জন্য সহজ। কারণ হানাফী মাযহাবের সহায়ক আলেম সমাজ রয়েছে বিশ্বের সকল ভৌগলিক এলাকায়। বাংলাদেশের একজন ভিখারীর পক্ষ্যে পাসপোর্ট ভিসা করে, উড়ো জাহাজে চড়ে মক্কা-মদীনায় গিয়ে সেখানকার আলেম থেকে ওজুর নিয়ম শিখে নামাজ পড়া সম্ভব নয়। যারা মক্কা-মদীনার আলেম মানতে বলে তারা আগে সারা বিশ্বের সকল মসজিদে ইমাম হিসেবে মক্কা-মদীনার আলেম নিয়োগ প্রদান করুক। তারপর লোকদেরকে মক্কা-মদীনার আলেম মানতে বলুক। 


বাতাস ছাড়া জীবন বাঁচেনা সেজন্য বিশ্বের সকল স্থানে বাতাস আছে। সঠিক নিয়মে ইবাদত করে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হলেও সঠিক নিয়মে ইবাদত করার সহায়ক আলেম সমাজ প্রয়োজন। সেজন্য সঠিক নিয়মে ইবাদত করার সহায়ক হানাফী আলেম বিশ্বের সকল স্থানে আছে। এর থেকে এটা পরিস্কার বাতাসের ব্যবস্থাপক যে আল্লাহ, হানাফী মাযহাবের ব্যবস্থাপকও সেই আল্লাহ। আর আল্লাহ যে হানাফী মাযহাবের ব্যবস্থাপক সেই হানাফী মাযহাব সঠিক না হওয়ার সংগত কোন কারণ নেই। 


সহিহ আল বোখারী ৫৯ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-

৫৯।হযরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন একটি বৃক্ষ আছে যার পাতা ঝরে পড়ে না আর তা’ হলো মুসলমানদের দৃষ্টান্ত। তোমরা বলত, সেটা কি গাছ? সাহাবীরা বনের বৃক্ষরাজি নিয়ে ভাবনায় লিপ্ত হলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমার মনে হলো, ওটা খেজুর গাছ। কিন্তু আমি তা’ বলতে লজ্জা বোধ করলাম। সাহাবীরা বলেন, তা’ কি গাছ, আপনিই বলে দিন। তিনি বললেন, সেটা খেজুর গাছ।   


* মুসলিমের দৃষ্টান্ত পাতা না ঝরা খেজুর গাছের মত। তো পাতা না ঝরা এ দৃষ্টান্ত হানাফী মাযহাবে বিদ্যমান। কারণ শুরু থেকে অদ্যাবধি তেরশ বছরের বেশী সময ধরে হানাফরিা মুসলিমদের মাঝে তাদের দুই তৃতীয়াংশের বেশী সংখ্যা গরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। সংগত কারণে সহিহ আল বোখারী ৫৯ নং হাদিস শুধুমাত্র হানাফীদেরকে সঠিক এবং অহানাফী সকল মুসলিম দলকে পথভ্রষ্ট সাব্যস্ত করে। সংগত কারণে হানাফীরা আল্লাহর ইবাদতকারী দল হিসাবে তাঁর সাথে ওয়াদা পালনকারী দল সাব্যস্ত হয়।

Post a Comment

0 Comments