সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ৯৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯৬। নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম ঘর, যা মানব জাতির জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। তাতো মক্কায়। উহা বরকতময় ও বিশ্বজগতের জন্য হেদায়াত।
# সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ৯৬ নং আয়াতের তাফসির – তাফসিরে ইবনে কাছির
৯৬।বায়তুল্লাহর মধ্যেই হেদায়াত বিদ্যমান রয়েছে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* যেহেতু মতভেদ হলে মহানবি (সা.)উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে বলেছেন সেহেতু তাঁর উম্মতের সর্ববৃহৎ দল পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না, এ বিষযে স্বয়ং মহানবি (সা.) নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১২৫ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১২৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর প্রতিনিধি তিন শ্রেণীর, যোদ্ধা, হাজী এবং উমরাহ আদায়কারী।
* ফিতনাবাজরা বাযতুল্লায় আসুক তারপর দেখুক আল্লাহর প্রতিনিধি হাজী এবং উমরাহ আদায়কারীগণের সর্ববৃহৎ দল কিভাবে নামাজ পড়ে? ইমাম আবু হানিফা (র.) এটা ৫৫ বার দেখেছেন। তখন যারা হাজী এবং উমরাহ আদায়কারী ছিলেন তারা ছিলেন তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ।
# তাবেঈ, তাবে তাবেঈ
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের (রা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ।
সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।
* রাসূলের (সা.) সময়ে ছিলেন সাহাবা (রা.), তারপর ছিলেন তাবেঈ, তারপর ছিলেন তাবে তাবেঈ। রাসূল (সা.) তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণের সঠিকতা সাব্যস্ত করায় তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।
হাজী এবং উমরাহ আদায়কারী তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণ আরো অধিকতর সঠিক। হজ্জের সময়ে তাদের নারী-পুরুষ একত্রে নামাজ পড়েছেন। ইমাম আবু হানিফা (র.) তা’ ৫৫ হজ্জ্বে দেখেছেন। তথাপি তাঁর নামাজের নিয়ম বেঠিক হতে পারে কি? আর তাঁকেও তো কোরআন ও হাদিস সঠিক সাব্যস্ত করে।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ। তাদের অনুসারী হতে হবে।
সহিহ মুসলিম, ৬৩৩৯ নং ও ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৩৯।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। যদি দীন আসমানের দূরবর্তী সুরাইয়া নক্ষত্ররাজির কাছে থাকত, তবে পারস্যের যে কোন ব্যক্তি তা’ নিয়ে আসত; অথবা তিনি বলেছেন, কোন পারসিক সন্তান তা’ অর্জন করত।
সহিহ মুসলিম, ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৪০। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হল। যখন তিনি এ আয়াত পড়লেন, ‘ওয়া আখারিনা মিনহু লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম - আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’ তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এরা কারা? নবি করিম (সা.) তার কোন জবাব দিলেন না। এমন কি সে একবার অথবা দু’ বার কিংবা তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাস করল। রাবী বলেন, তখন আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রা.) ছিলেন। রাবী বলেন, নবি করিম (সা.) তাঁর হাত সালমানের (রা.) উপর রাখলেন, এরপর বললেন, যদি ঈমান সূরাইয়া তারকার কাছে থাকত তাহলে অবশ্যই তার গোত্রের লোকেরা সেখান পর্যন্ত পৌঁছত।
* হাদিসে বলা তাবেঈ হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.)। কারণ তিনি ছাড়া হযরত সালমানের (রা.) গোত্রের লোক আর কোন মুজতাহিদ তাবেঈ নেই। সংগত কারণে নামাজের নিয়মে তাঁকে বেঠিক বলার সুযোগ নেই। তাঁর নিকট থেকে যিনি নামাজের নিয়ম শিখেছেন সেই ইমাম আবু ইউসুফকেও (র.) বেঠিক বলার সুযোগ নেই।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ। তাদের অনুসারী হতে হবে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩০ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩০। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার থেকে একটি হাদিস শুনে অতঃপর তা’ অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয় আল্লাহ তাকে হাস্যোজ্জল ও আনন্দময় করে দেবেন। কেননা এমন কতক ফিকাহ বাহক রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ফকীহ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে।
* মহানবির (সা.) পক্ষ থেকে দু’জন ফকিহ তাঁর হাদিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত।তাঁদের একজন ফিকাহ শিক্ষাদানকারী এবং অন্যজন উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী, যিনি তাঁর ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ে অধিকতর জ্ঞানী। ইতিহাসে এমন শুধু একটি জুটি আছে, তাঁরা হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.) ও তাঁর শিক্ষার্থী ইমাম আবু ইউসুফ (র.) যিনি তাঁর ফিকাহ শিক্ষাদানকারী ইমাম আবু হানিফার চেয়ে উক্ত বিষয়ের অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন। কারণ ইমাম আবু ইউসুফের (র.) খেলাফতের প্রধান বিচার পতির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু ইমাম আবু হানিফার খেলাফতের প্রধান বিচারপতির যোগ্যতা থাকলেও তাঁর খেলাফতের প্রধান বিচারপতির অভিজ্ঞতা ছিল না। সংগত কারণে ফিকাহ শিক্ষাদানকারী ইমাম আবু হানিফার (র.) চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী ইমাম আবু ইউসুফ (র.) অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন। তাবে তাবেঈ গণের মধ্যে এর চেয়ে বেশী জ্ঞানী অন্য কাউকে সাব্যস্ত করা যায় না বিধায় তাবে তাবেঈ গণের মধ্যে সবচেয়ে বড় জ্ঞানী হানাফী মাযহাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আবু ইউসুফ (র.)। কেউ তাঁকে কিভাবে বেঠিক বলবে?
যে আব্বাসীয় খলিফাগণ তাঁদের অনুসারী হয়েছেন হাদিস তাঁদেরকেও সঠিক সাব্যস্ত করে।
# আব্বাসীয় সংক্রান্ত হাদিস
সহিহ আল বোখারী, ৩৪৪২ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৪২। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। যখন অভাব অনটন দেখা দিত তখন ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের উছিলায় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন হে মাবুদ! আমরা আমাদের নবির (সা.) উছিলায় তোমার নিকট প্রার্থনা করতাম যে, তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর তখন প্রবল বর্ষণ করতে। এখন আমরা আমাদের নবির চাচা আব্বাসের (রা.) উছিলায় প্রার্থনা করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন ভারী বর্ষণ শুরু হত।
* উছিলায় হযরত আব্বাস (রা.) ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ব্যক্তি এবং তাঁর বংশের খলিফাগণ ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ইসলামী নেতা।
সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।
রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ – মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।
* আব্বাসীয়গণ মহানবির (সা.) দোয়ায় খলিফা হওয়ায় তারা মুসলিম বিশ্ব আমির হিসেবে সঠিক ছিলেন।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৪১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১৪১। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন যেমন প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন ইব্রাহীমকে (আ.)। কিযামতের দিন জান্নাতে আমার ও ইব্রাহীমের আসন সমানা-সামনি হবে। আর আব্বাস (রা.) আমাদের দুই বন্ধুর মাঝখানে একজন মুমিন হিসেবে অবস্থান করবেন।
মেশকাত ৫৮৯৭ নং হাদিসের (সাহাবীদের ফজিলত ও মর্যাদা অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৮৯৭। হযরত ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)ইরশাদ করেন, আব্বাস (রা.) আমার সঙ্গে জড়িত এবং আমি তার সাথে জড়িত।
* সংগত কারণে আব্বাসীয় খলিফাগণের ৫৩ জন যারা মুসলিম বিশ্বের আমির সাব্যস্ত তাদের সাথে মহানবি (সা.) জড়িত। মহানবি (সা.) যাদের সাথে জড়িত তারা অবশ্যই হেদাযাত প্রাপ্ত ও সঠিক।
সহিহ আল বোখারী, ৩৪৩৮ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৩৮। হযরত সাদ (রা.)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি (সা.) আলীকে (রা.) লক্ষ্য করে বলে ছিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট যে মর্যাদার দিক হতে মূসা (আ.) এর নিকট হারুণ (আ.) যে পর্যায়ের ছিলেন তুমিও আমার নিকট সে পর্যায়ে আছ।
* হারুন (আ.) যেমন মুছার (আ.) হুবহু অনুসারী ছিলেন, হযরত আলীও (রা.) তেমন মহানবির (সা.) হুবহু অনুসারী ছিলেন, হযরত আলীর (রা.) হুবহু অনুসারী ছিলেন কুফার আলেম সমাজ।কুফার আলেম সমাজের হুবহু অনুসারী ইমামা আবু হানিফা (র.) ও ইমাম আবু ইউসুফ (র.)। তাঁদের অনুসারী হানাফী আব্বাসীয় খলিফাগণ। তাহলে হানাফী ইবাদতের নিয়ম বেঠিক হতে পারে কেমন করে?
সহিহ বোখারী ৭৮০ নং (কিতাবুল আযান) হাদিসের অনুবাদ-
৭৮০। হযরত মুতাররাফ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.), আলী ইবনে আবু তালিবের (রা.) পেছনে একদা নামাজ পড়লাম। দেখলাম তিনি সিজদার সময়, সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময় এবং দু’ রাক’আত শেষে দাঁড়াবার সময় তাকবীর বললেন। তিনি নামাজের সালাম ফিরালেন। ইমরান আমার হাত ধরে বললেন, এ ব্যক্তি আমাকে মুহাম্মদের (সা.) নামাজের অবিকল অনুরূপ নামাজ পড়ালেন। অথবা এ কথা না বলে তিনি বললেন, এ ব্যক্তি মুহাম্মদের (সা.) নামাজের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। অর্থাৎ মুহাম্মদ (সা.) যেভাবে নামাজ পড়তেন, ইনিও সেভাবে নামাজ পড়লেন।
* হাদিস অনুযায়ী হযরত আলীর (রা.) ইবাদত ছিল অবিকল মহানবির (সা.) অনুরূপ। সংগত কারণে তাঁর অনুসারী হানাফীদের ইসলামও অবিকল মহানবির (সা.) অনুরূপ।
সহিহ বোখারী ৩৮ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
৩৮।হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন, দ্বীন সহজ। যে কেউ দীনের কাজে অধিক কড়াকড়ি করে, তাকেই দীন পরাজিত করে। সুতরাং তোমরা মধ্যমাবস্থা অবলম্বন কর এবং (দীনের) নিকটবর্তী হও আর প্রফুল্ল থাক, আর সকালে, বিকালে ও রাতের কিছু অংশে সাহায্য প্রার্থনা কর।
* দীনের কাজে হানাফীরা চিরকাল মধ্যম পন্থি। অহানাফীদের সব দল চরম পন্থি। ইবাদীরা কবিরা গুণাহ বিষয়ে চরমপন্থি। শিয়ারা হযরত আলীর (রা.) পক্ষপাতিত্বে চরমপন্থি। আহলে কোরআন, হাদিস না মানায় চরমপন্থি। আহলে হাদিস, সহিহ হাদিস মানতে গিযে কোন কোন ক্ষেত্রে এর নাসেখ-মানসুখও মানতে নারাজ।শাফেঈ, হাম্বলী ও মালেকী মাযহাবের লোকেরা তাদের ইমাম গণ হানাফীদের সাথে সঠিক মতভেদ করলো কিনা তা’ যাচাই না করেই তাদের ইমামদের অনুসারী হয়ে হানাফীদের থেকে আলাদা রয়েছে। অথচ হানাফীদের সাথে তাদের ইমামদের করা প্রতিটি মতভেদ ১০০% ভুল প্রমাণ করা যায়। কিন্তু হানাফীরা তাদের প্রধান ইমাম আবু হানিফারও (র.) কতিপয় মতের উপর আমল করে না সেসব মতে তাঁর ভুল হওয়ার কারণে। সংগত কারণে হানাফী ছাড়া মুসলিমদের আর কোন দলকে মধ্যমপন্থী ও সঠিক সাব্যস্ত করা যায় না।
সহিহ বোখারী ৬৯ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
৬৯। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। হযরত নবি করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা সহজ পথ অবলম্বন কর, কঠিন করে তুলও না এবং সুখবর দাও। বিরক্তি-অস্বস্তি সৃষ্টি করও না।
* হাদীসে দ্বীন সহজ বলা হয়েছে। হানাফী মাযহাব পালনের জন্য খুব সহজ। সংগত কারণে শুধুমাত্র হানাফী মাযহাব দীন। হানাফী মাযহাব ছাড়া অন্য কিছু দীন নয়।
হানাফী মাযহাব সারা বিশ্বের জন্য সহজ। কারণ হানাফী মাযহাবের সহায়ক আলেম সমাজ রয়েছে বিশ্বের সকল ভৌগলিক এলাকায়। বাংলাদেশের একজন ভিখারীর পক্ষ্যে পাসপোর্ট ভিসা করে, উড়ো জাহাজে চড়ে মক্কা-মদীনায় গিয়ে সেখানকার আলেম থেকে ওজুর নিয়ম শিখে নামাজ পড়া সম্ভব নয়। যারা মক্কা-মদীনার আলেম মানতে বলে তারা আগে সারা বিশ্বের সকল মসজিদে ইমাম হিসেবে মক্কা-মদীনার আলেম নিয়োগ প্রদান করুক। তারপর লোকদেরকে মক্কা-মদীনার আলেম মানতে বলুক।
বাতাস ছাড়া জীবন বাঁচেনা সেজন্য বিশ্বের সকল স্থানে বাতাস আছে। সঠিক নিয়মে ইবাদত করে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হলেও সঠিক নিয়মে ইবাদত করার সহায়ক আলেম সমাজ প্রয়োজন। সেজন্য সঠিক নিয়মে ইবাদত করার সহায়ক হানাফী আলেম বিশ্বের সকল স্থানে আছে। এর থেকে এটা পরিস্কার বাতাসের ব্যবস্থাপক যে আল্লাহ, হানাফী মাযহাবের ব্যবস্থাপকও সেই আল্লাহ। আর আল্লাহ যে হানাফী মাযহাবের ব্যবস্থাপক সেই হানাফী মাযহাব সঠিক না হওয়ার সংগত কোন কারণ নেই।
# হানাফী মাযহাব না কমে বেড়েই চলছে।
সহিহ আল বোখারী ৪৯ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
৪৯। হযরত ওবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তাকে আবু সুফিয়ান ইবনে হরবের বরাত দিয়ে বলেছে, বাদশা হিরাক্লিয়াস আবু সুফিয়ানকে বলেন, আমি জিজ্ঞাস করলাম, তারা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে? তুমি বললে, তারা বাড়ছে। ঈমানের বিষয়টি পূর্ণতা লাভের সময় পর্যন্ত এরূপই হয়ে থাকে। আমি আরও জিজ্ঞাস করলাম, কেউ কি তাঁর ধর্মে প্রবেরে পর তাঁর প্রতি বিরাগ হয়ে তা’ পরিত্যাগ করছে? তুমি বললে, না। ঈমানে দীপ্তি ও সজীবতা হৃদয়ের সাথে মিশে গেলে এরূপই হয়ে থাকে। তাঁর প্রতি কেউ অসন্তুষ্ট হয় না।
* মুসলিমদের মধ্যে শুধুমাত্র হানাফী সংখ্যায় বেড়ে এরমধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা ক্রমাগত বেড়ে এখন মোট মুসলিমের প্রায় ৮০% হানাফী্। অহানাফীদের অনেক দল এর মধ্যে বিলুপ্ত হযেছে। আহলুল হাদিসের অনুসারীরা ১০০% থেকে কমে ১% এর কম হয়ে গেছে। এদলটি বিলুপ্তির পথে রয়েছ্। কিন্তু হানাফী কখনো না কমে সব সময় বেড়েই চলছে। সংগত কারণে সহিহ আল বোখারী ৪৯ নং হাদিস হানাফীদেরকে ১০০% সঠিক সাব্যস্ত করে।
সহিহ আল বোখারী ৫৯ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৯।হযরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন একটি বৃক্ষ আছে যার পাতা ঝরে পড়ে না আর তা’ হলো মুসলমানদের দৃষ্টান্ত। তোমরা বলত, সেটা কি গাছ? সাহাবীরা বনের বৃক্ষরাজি নিয়ে ভাবনায় লিপ্ত হলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমার মনে হলো, ওটা খেজুর গাছ। কিন্তু আমি তা’ বলতে লজ্জা বোধ করলাম। সাহাবীরা বলেন, তা’ কি গাছ, আপনিই বলে দিন। তিনি বললেন, সেটা খেজুর গাছ।
* মুসলিমের দৃষ্টান্ত পাতা না ঝরা খেজুর গাছের মত। তো পাতা না ঝরা এ দৃষ্টান্ত হানাফী মাযহাবে বিদ্যমান। কারণ শুরু থেকে আজ অবধি তেরশ বছরের বেশী সময ধরে হানাফরিা মুসলিমদের মাঝে তাদের দুই তৃতীয়াংশের বেশী সংখ্যা গরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। সংগত কারণে সহিহ আর বোখারী ৫৯ নং হাদিস শুধুমাত্র হানাফীদেরকে সঠিক এবং অহানাফী সকল মুসলিম দলকে পথভ্রষ্ট সাব্যস্ত করে।
সূরাঃ ১১০ নাসর, ১ নং থেকে ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে।
২। আর তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে।
৩। তখন তুমি তোমার রবের হামদ এর তাসবিহ পাঠ করবে, আর তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি তো তওবা কবুলকারী।
* আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসার পর মহানবি (সা.) মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখেছেন।হানাফী মাযহাব গঠিত হওয়ার পর থেকে মহানবির (সা.) উম্মতগণ দেখছে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসার পর মানুষ দলে দলে হানাফী মাযহাবে প্রবেশ করছে। সংগত কারণে হানাফী মাযহাব গঠিত হওয়ার পর থেকে হানাফী মাযহাব আল্লাহর দীন সাব্যস্ত হয়।
সহিহ মুসলিম, ১০২ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
১০২। হযরত তামিমদারী (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন, কল্যাণ কামনাই দীন। আমরা আরয করলাম, কার জন্য কল্যাণ কামনা? তিনি বললেন, আল্লাহ, তাঁর কিতাবের, তাঁর রাসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের।
* আল্লাহর কল্যাণ কামনা তাঁর বান্দা বৃদ্ধি করা। কিতাবের কল্যাণ কামনা এর পাঠক বৃদ্ধি করা। রাসূলের (সা.) কল্যাণ কামনা তাঁর উম্মত বৃদ্ধিকরা। মুসলিম শাসকের কল্যাণ কামনা তাদের শাসন সুদৃঢ় করণে দায়িত্ব পালন করা। মুসলিম জনগণের কল্যাণ কামনা তাদের জন্য মুসলিম শাসনের ব্যবস্থা করা। কারণ অনেক অমুসলিম শাসনে মুসলিমদের কষ্টের শেষ থাকে না। দীনের এমন সকল বৈশিষ্টে শুধুমাত্র হানাফী মাযহাব দীন সাব্যস্ত হয়। কারণ হানাফী মোট মুসলিমের প্রায় ৮০%। সংগত কারণে এটা প্রমাণ হয যে তারাই আল্লাহর বান্দা, কোরআনের পাঠক ও নবির (সা.) উম্মত অধিক বৃদ্ধি করেছে। হানাফী মুসলিমদের মাঝে অধিক অঞ্চল শাসন করছে বিধায় এটা প্রমাণ হয় যে তারাই মুসলিম শাসকদের শাসন সুসংহত করায় অধিক কাজ করছে এবং মুসলিম জনগণকে তারা অধিক মুসলিম শাসন উপহার দিচ্ছে। সংগত কারণে উক্ত হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয় হানাফী ছাড়া মুসলিমদের অন্য কোন দল সঠিক নয়।
সহিহ আবু দাউদ, ৪২০৬ নং হাদিসের (ফিতনা-ফ্যাসাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪২০৬। হযরত আবু মালেক আশয়ারী (র.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তিন ধরনের ফিতনা থেকে বাঁচিয়েছেন। যথাঃ ১। তোমাদের নবি তোমাদের জন্য বদদোয়া করবেন না, যাতে তোমরা এক সাথে ধ্বংস হয়ে যাবে।২। বাতিলের অনুসারীরা কখনোই হকের অনুসারীদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না। এবং ৩। তোমরা সবাই একসাথে পথভ্রষ্ট হবে না।
* হানাফীদের গঠিত হওয়ার পর থেকে তেরশ বছরের বেশী সময় ধরে অহানাফীরা হানাফীদের উপর জয়ী হতে পারেনি। সংগতকারণে সহিহ আবু দাউদ, ৪২০৬ নং হাদিস হানাফীদেরকে হক এবং অহানাফীদেরকে বাতিল সাব্যস্ত করে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৯২ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৯২। আউফ ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইয়াহুদী জাতি একাত্তরটি দলে বিভক্ত হয়েছিল। তারমধ্যে সত্তরটিদল জাহান্নামী এবং একটি দল জান্নাতি। আর খ্রিস্টান জাতি বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল তাদের মধ্যে একাত্তর দল জাহান্নামী এবং একটিমাত্র দল জান্নাতী। সেই সত্তার শপথ,যাঁর হাতে মুহাম্মদের (সা.) প্রাণ, অবশ্যই আমার উম্মত তিহাত্তরটি দলে বিভক্ত হবে। তারমধ্যে একটি দল জান্নাতী এবং বাহাত্তরটি হবে জাহান্নামী।আরয করা হলো, আল্লাহর রাসূল (সা.) কোন দলটি জান্নাতী? তিনি বললেন, একতাবদ্ধ যারা সুন্নতের উপর অটল থাকবে।
* হাদিস অনুযায়ী এখন মুসলিমদের একতাবদ্ধ দলটি তাদের সঠিক দল। হাদিস অনুযায়ী মুসলিমদের ১০০% একতা বদ্ধ হবে না। এরপর হানাফীতে প্রায় ৮০% একতাবদ্ধ। অন্যরা একতাবব্ধ হলেও তারা আর ৮০% হতে পারবে না। সঙ্গত কারণে হানাফীদেরকে পিছনে ফেলে তাদের সঠিক সাব্যস্ত হওয়া সম্ভব নয়। সংগত কারণে হানাফীরা অনিবার্যভাবে সঠিক।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৭। হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে হিন্দুস্থানের যুদ্ধের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি তা’ পেলে তাতে আমার জান মাল উৎসর্গ করব। আর আমি যদি নিহত হই তবে মর্যাদাবান শহীদ বলে গণ্য হব, আর যদি প্রত্যাবর্তন করি, তাহলে আমি আবু হুরায়রা হব আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৮। হযরত রাসূলুল্লাহর (সা.)গোলাম সাওবান (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমার উম্মতের দু’টি দল, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জাহান্নাম হতে নাজাত দান করেছেন, একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে আর একদল যারা ঈসা ইবনে মরিয়মের সাথে থাকবে।
* তরাইনের দ্বিতীয় ও পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ হয়েছে আফগান হানাফী ও ভারতীয় হিন্দুদের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ। যা হানাফীদেরকে মহানবির (সা.) উম্মত সাবৗ্যস্ত করে। ভারতে সামনে হিন্দুদের সাথে যুদ্ধ হলেও তাও হানাফীদের সাথেই হবে। সংগত কারণে সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিস ও সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিস দ্বারা অহানাফী কোন দলকে সঠিক সাব্যস্ত করার কোন সুযোগ নেই।
সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।
* মহানবি (সা.) আল্লাহর দরবারে ইমামদের সৎপথ প্রাপ্তির দোয়া করেছেন। তাঁর দোয়া অনুযায়ী বেশী সংখ্যক ইমাম সৎপথ পাবেন। কারণ ইমামগণ আলেম। আর আলেমগণ নবিগণের (আ.) সরাসরি ওয়ারিশ। আর নবিগণের বেশী সংখ্যক সরাসরি ওয়ারিশ সৎপথ প্রাপ্ত; যেমন আদমের (আ.) একজন সরাসরি ওয়ারিশ ছাড়া আর সবাই সৎপথ প্রাপ্ত, নূহের (আ.) দুজন সরাসরি ওয়ারিশ ছাড়া আর সবাই সৎপথ প্রাপ্ত, লুতের (আ.)একজন সরাসরি ওয়ারিশ ছাড়া আর সবাই সৎপথ প্রাপ্ত।এভাবে সকল নবির পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তাঁদের সরাসরি ওয়ারিশদের বেশী সংখ্যক সৎপথ প্রাপ্ত এবং কমসংখ্যক সরাসরি ওয়ারিশ সৎপথ প্রাপ্ত নয়।সংগত কারণে ইমামগণের বেশী সংখ্যক হানাফী সৎপথ প্রাপ্ত এবং তাদের বিরোধী কম সংখ্যক ইমাম সৎপথ প্রাপ্ত নয় বা তারা পথভ্রষ্ট।সংগত কারণে সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিস হানাফীদেরকে ১০০% সঠিক এবং অহানাফীদেরকে পথভ্রষ্ট প্রমাণ করে।
কিন্তু শয়তান হানাফী বিরোধী কতিপয় হাদিসকে সহিহ সাব্যস্ত করলো। শয়তান যাদের মাধ্যমে এ অকাজ করলো তাদেরকে কেউ সহিহ সাব্যস্ত করেনি। তারা যে পদ্ধতিতে এসব হাদিসকে সহিহ সাব্যস্ত করলো কোরআন সে পদ্ধতিকে অসহিহ প্রমাণ করে।
সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে জান না। আমরা তাদের সম্পর্কে জানি।আমারা সিগ্র তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেব। এরপর তারা মহা শাস্তির দিকে যাত্রা করবে।
* যেখানে রাসূল (সা.) জানেন না কোন লোক মোনাফেক, আর কোন লোক সহিহ, সেখানে যারা হানাফী বিরোধী হাদিস বলল তাদেরকে লেকেরা সহিহ বলল কেমন করে?
সূরাঃ ৪৯ হুজরাত, ৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬। হে মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা নিয়ে আসে, তোমরা তা’ পরীক্ষা করে দেখবে, পাছে অজ্ঞতা বশত তোমরা কোন সম্প্রদায়েকে ক্ষতিগ্রস্থ্য করে বস এবং তোমাদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদেরকে অনুতপ্ত হতে হয়।
* আল্লাহ পাপাচারীর বার্তা পরীক্ষা করে এর সঠিকটা গ্রহণ করতে বললেন। অথচ লোকেরা যাকে পাপাচারী মনে করেছে তাদের বলা সব হাদিসই বাদ দিয়ে দিল। বিষয়টা রীতিমত বিস্ময় কর।
সূরাঃ ৪৯ হুজরাত, ১২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২। হে মুমিনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ এবং তোমরা একে অন্যের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করবে না এবং একে অপরের গিবত (পশ্চাতে নিন্দা) করবে না। তোমোদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খাওয়া পছন্দ করবে? তোমরা তো এটা অপছন্দ কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর; আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী পরম দয়ালূ।
* আল্লাহ কারো গোপনীয় বিষয় সন্ধান করতে নিষেধ করলেন। অথচ লোক সহিহ কিনা জানতে লোকেরা মানুষের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করে কবিরা গুণাহে লিপ্ত হলো। আল্লাহ গিবত করতে নিষেধ করলেন। অথচ লোকেরা কারো হাদিস পরিত্যাগের অযুহাত হিসেবে লোকদেরকে যঈফ বলে গিবত করে কবিরা গুনাহ করলো। এমনকি শয়তানেরা ইমাম আবু হানিফাকেও (র.) যঈফ বলার মত অরাযক আচরণ করলো।
অথচ হাদিস সহিহ সাব্যস্ত করার জন্য সাহাবা (রা.), তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ এ তিন দলের সর্ববৃহৎ দলের আমল বিবেচনা হাদিস সহিহ সাব্যস্ত করার সহিহ পদ্ধতি। ইমাম আবু হানিফা (র.)সাহাবা (রা.), তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ এ তিন দলকে দেখেছেন। যারা হাদিসের কিতাব সংকলন করেছে তারা সাহাবা (রা.), তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ এ তিন দলকে দেখেনি। সংগত কারণে ইমাম আবু হানিফা (র.) যে হাদিস সহিহ বলেছেন সে হাদিস অবশ্যই সহিহ। আর তাঁর মতের বিপরীতে উপস্থাপিত হাদিস সহিহ হতে পারে না। কোরআন ও হাদিস ইমাম আবু হানিফাকে (র.) সহিহ সাব্যস্ত করে। যারা তাঁর মতের বিপরীত হাদিসকে সহিহ দাবী করেছে কোরআন ও হাদিস তাদেরকে সহিহ সাব্যস্ত করে না। হানাফী মাযহাবে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত ৫৫ জন সহিহ লোক আছে। তাদের মাযহাবের বিপরীত কোন হাদিস কিতাবে সংকলন করা গুরুতর অপরাধ। কারণ এর দ্বারা সাধারণ লোক প্রতারিত হয়। হাদিসের কিতাব সমূহ থেকে এমন সব হাদিস বাদ দিয়ে হাদিসের কিতাব সমূহ নতুন করে সংকলন করা উচিৎ।
যে দলে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত ৫৫ জন লোক থাকে সে দল সঠিক না হয়ে যে সব দলে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত কোন লোক না থাকে সে সব দল সঠিক হয কেমন করে? কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত সঠিক লোক বিহীন দল সমূহ শয়তান তৈরী করেছে মুসলিমদেরকে ফিতনায় ডুবিয়ে ইসলামের গতি রোধ করার জন্য। সকল মুসলিমদের উচিৎ শয়তানী দল ত্যাগ করে হানাফী হয়ে নিজের ও ইসলামের কল্যাণ সাধন করা।
0 Comments