Ad

রোযা না রাখার ভয়ানক শাস্তি



রোযা না রাখার শাস্তি কি ?
হাদীসে কুদসীতে রয়েছে, আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ বলেছেন, রোযা ছাড়া আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য; শুধু রোযা ছাড়া। কারণ, তা আমার জন্য। তাই আমিই এর প্রতিদান দেব। রোযা ঢাল স্বরূপ। রোযা রাখার দিন তোমাদের কেউ যেন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে ঝগড়া করে তাহলে সে যেন বলে আমি রোযাদার। যাঁর হাতে মুহাম্মদের জীবন তাঁর শপথ! অবশ্যই (অনাহারের দরুণ সৃষ্ট) রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও সুগন্ধিময়। রোযাদারের জন্য রয়েছে দু’টি আনন্দের সময় : একটি হলো ইফতারের সময় আর অপরটি (কিয়ামতের দিন) তার প্রভুর সাথে সাক্ষাতের সময়।’ [বুখারী : ১৯০৪; মুসলিম : ২৭৬২]
হযরত আবু উমামা রা.বলেন,আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা:)বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার নিকট দুই ব্যাক্তি আগমন করল। তারা আমাকে বলল, আপনি পাহাড়ের উপরে উঠুন। আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারবো না। তারা বলল, আমরা আপনাকে সহজ করে দিব। আমি উপরে উঠলাম। যখন পাহাড়ের সমতলে পৌছালাম, হঠাত ভয়ঙ্কর আ্ওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি বললাম, এসব কিসের আ্ওয়াজ? তারা বলল, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ। তারপর তারা আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল। হঠাত কিছু লোক পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশী দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এবং তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝড়ছে। আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, যারা ইফতারের সময় হ্ওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলে।- সহীহ ইবনে খযাইমা, হাদীস :১৯৮৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৪৪৮;
মাহে রমজানে নেক আমলের ফজিলত যেমন বেশি,তেমনি এ মাসে গুনাহ করলে এর শাস্তিও বেশি। বিশেষ করে ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখলে যে কঠিন শাস্তির হুকুম এসেছে,সেই ব্যক্তি ইহকালে তা না পেলেও পরকালে তার শাস্তি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। 
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ আছে যে, নবী করিম (সাঃ)বলেছেন,যে ব্যক্তি কোনো শরিয়ত অনুমোদিত ওজর ছাড়া মাহে রমজানের একটি রোজাও ছেড়ে দেয়,তাহলে সে নয় লাখ বছর জাহান্নামের দাউ দাউ করে প্রজ্বলিত আগুনে জ্বলতে থাকবে।
বিনা কারণে যে ব্যক্তি মাহে রমজানের মাত্র একটি রোজা না রাখে এবং পরে যদি ওই রোজার পরিবর্তে সারা বছরও রোজা রাখে, তবু সে ততটুকু সওয়াব পাবে না, যতটুকু মাহে রমজানে ওই একটি রোজার কারণে পেত। এ সম্পর্কে ফিকাহবিদদের মতে, দুই মাস একাধারে রোজা রাখলে স্বেচ্ছায় ভাঙা একটি রোজার কাফফারা আদায় হয় আর এই কাফফারার বিনিময়ে একটি রোজার ফরজের দায়িত্বটা কেবল আদায় হয়। আর যারা নানা অজুহাতে ও স্বেচ্ছায় পুরো মাহে রমজানে রোজা রাখে না, তাদের শাস্তি কত যে ভয়াবহ হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এ বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
আল্লাহ আমাদেরকে সহীহভাবে রোযা রাখার তৌফিক দান করুন। আমিন

Post a Comment

0 Comments