.
▪️সকাল- সন্ধ্যার দু'আ -১
-------------------------------
"যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসী পড়বে সে বিকাল হওয়া পর্যন্ত জ্বীন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে, আর যে ব্যক্তি বিকালে তা পড়বে সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জ্বীন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে।"(১)
আয়াতুল কুরসি: সূরা আল-বাকারাহ্ ২৫৫
أَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
বিতাড়িত শয়তান থেকে আমি আল্লাহ্র আশ্রয় নিচ্ছি।
আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম
اللّٰهُ لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ ۚ
আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক।
আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যূল কাইয়্যূমু
لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ ۚ
তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়।
লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম।
لَّهُ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ ۗ
আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর।
লাহূ মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্বি।
مَنْ ذَا الَّذِى يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهٖ ۚ
কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে?
মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা বিইযনিহী।
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ
তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন।
ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম।
وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖٓ إِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ
আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না।
ওয়ালা ইয়ুহীতূনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহী ইল্লা বিমা শাআ।
وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضَ ۖ
তাঁর ‘কুরসী’ আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে;
ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব।
وَلاَ يَؤُوْدُهُ حِفْظُهُمَا ۚ
আর এ দুটোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না।
ওয়ালা ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা
وَهُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ
আর তিনি সুউচ্চ সুমহান।
ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যূল ‘আযীম
[সূরা আল-বাকারাহ্, ২৫৫]
রেফারেন্স:(১)
হাদীসটি হাকিম সংকলন করেছেন, ১/৫৬[২] আর শাইখ আলবানী একে সহীহুত তারগীব ওয়াত-তারহীবে সহীহ বলেছেন ১/২৭[৩] আর তিনি একে নাসাঈ, তাবারানীর দিকে সম্পর্কযুক্ত করেছেন এবং বলেছেন, তাবারানীর সনদ ‘জাইয়্যেদ’ বা ভালো।
.
.
▪️সকাল সন্ধ্যার দু'আ-২
----------------
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে ‘ক্বুল হু আল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস), সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস তিনবার করে বলবে, এটাই তার সবকিছুর (নিরাপত্তার) জন্য যথেষ্ট হবে।"(২)
সবকিছুর (নিরাপত্তার) জন্য যথেষ্ট সূরা তিনটি নীচে দেওয়া হলো-
সূরা ইখলাস-
﷽
قُلْ هُوَ اللّٰهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ اللّٰهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ ﴿٣﴾ وَلَمْ يَكُنْ لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤﴾
উচ্চারণ- ক্বুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লাহুস্ সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ
অর্থ- বলুন, তিনি আল্লাহ্, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ্ হচ্ছেন ‘সামাদ’ (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী)। তিনি কাউকেও জন্ম দেন নি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নি। আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।
সূরা ফালাক্ব-
﷽
قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ﴿١﴾ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ ﴿٢﴾ وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ﴿٣﴾ وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِيْ الْعُقَدِ ﴿٤﴾ وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ﴿٥﴾
উচ্চারণ-ক্বুল আ‘উযু বিরব্বিল ফালাক্ব। মিন শাররি মা খালাক্ব। ওয়া মিন শাররি গা-সিক্বিন ইযা ওয়াক্বাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা-সা-তি ফিল ‘উক্বাদ। ওয়া মিন শাররি হা-সিদিন ইযা হাসাদ
অর্থ- বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে। ‘আর অনিষ্ট হতে রাতের অন্ধকারের, যখন তা গভীর হয়। আর অনিষ্ট হতে সমস্ত নারীদের, যারা গিরায় ফুঁক দেয়। আর অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।
সূরা নাস-
﷽
قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ ﴿١﴾ مَلِكِ النَّاسِ ﴿٢﴾ إِلَـٰهِ النَّاسِ ﴿٣﴾ مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ﴿٤﴾ الَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِيْ صُدُوْرِ النَّاسِ ﴿٥﴾ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ﴿٦﴾
উচ্চারণ- ক্বুল ‘আউযু বিরাব্বিন্না-স। মালিকিন্না-সি, ইলা-হিন্নাসি, মিন শাররিল ওয়াসওয়া-সিল খান্না-স, আল্লাযি ইউওয়াসউইসু ফী সুদূরিন না-সি, মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।
অর্থ- বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের ইলাহের কাছে, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে; যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।
রেফারেন্স:(২)
আবূ দাউদ ৪/৩২২, নং ৫০৮২; তিরমিযী ৫/৫৬৭, নং ৩৫৭৫। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৮[২]
.
.
▪️সকাল সন্ধ্যার দু'আ-৩
----------------
"যে ব্যক্তি এ দু'আ সকাল ও বিকাল তিনবার করে বলবে, আল্লাহর কাছে তার অধিকার হয়ে যায় তাকে কিয়ামতের দিন সন্তুষ্ট করা।"
কিয়ামতের দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের দু'আটি হলো-
رَضِيْتُ بِاللّٰهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلاَمِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّا
উচ্চারণ: রদ্বীতু বিল্লা-হি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান, ওয়াবি মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামা নাবিয়্যান
অর্থ: আল্লাহকে রব, ইসলামকে দীন ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নবীরূপে গ্রহণ করে আমি সন্তুষ্ট।
দু'আটি সকালে ও সন্ধ্যায় তিন বার পড়তে হবে।
রেফারেন্স:
আহমাদ ৪/৩৩৭; নং ১৮৯৬৭; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইলাহ, নং ৪; ইবনুস সুন্নী, নং ৬৮; আবু দাউদ, ৪/৩১৮, নং ১৫৩১; তিরমিযী ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৯।
.
.
▪️সকাল সন্ধ্যার দু'আ-৪
---------------
আপনার দুনিয়া ও আখেরাতের সকল চিন্তাভাবনার জন্য যখন আল্লাহ্ই যথেষ্ট হবেন সেই দু'আ:
সকালে ও সন্ধ্যায় নীচের দু'আটি সাতবার পড়বেন,
حَسْبِيَ اللّٰهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ
উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়াহুয়া রব্বুল ‘আরশিল ‘আযীম
অর্থ: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করি। আর তিনি মহান আরশের রব্ব।
"যে ব্যক্তি এই দু‘আটি সকালবেলা সাতবার এবং বিকালবেলা সাতবার বলবে তার দুনিয়া ও আখেরাতের সকল চিন্তাভাবনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন।"
রেফারেন্স:
ইবনুস সুন্নী, নং ৭১, মারফূ‘ সনদে; আবূ দাউদ ৪/৩২১; মাওকূফ সনদে, নং ৫০৮[১]
.
.
▪️সকাল-সন্ধ্যার দু'আ-৫
-----------------
যে দু'আটি সকাল সন্ধ্যায় তিন বার করে পড়লে আল্লাহ্ চাইলে কোন কিছু আপনার ক্ষতি করতে পারবে না।
সকালে ও সন্ধ্যায় তিন বার করে বলবেন,
بِسْمِ اللّٰهِ الَّذِيْ لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِيْ الْأَرْضِ
وَلاَ فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
উচ্চারণ: বিস্মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আস্মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম।
অর্থ: আল্লাহ্র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”
"যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং বিকালে তিনবার এটি বলবে, কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না।"
রেফারেন্স:
আবূ দাউদ, ৪/৩২৩, নং ৫০৮৮; তিরমিযী, ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৮; ইবন মাজাহ, নং ৩৮৬৯; আহমাদ, নং ৪৪৬। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ, ২/৩৩[২] আর আল্লামা ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ তাঁর ‘তুহফাতুল আখইয়ার’ গ্রন্থের ৩৯ পৃষ্ঠায় এটার সনদকে হাসান বলেছেন।
____________________________
.
▪️সকাল-সন্ধ্যার দু'আ-৬
উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক এবং কবুলযোগ্য আমলের জন্য যে দু'আটি সকাল-সন্ধ্যায় পড়বেন।
সকাল ও সন্ধ্যায় তিন বার করে বলবেন,
اللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًا
"আল্লা-হুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফে‘আন ওয়া রিয্কান তাইয়্যেবান ওয়া ‘আমালান মুতাক্বাব্বালান।"
"হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক এবং কবুলযোগ্য আমল প্রার্থনা করি।"
রেফারেন্স:
হাদীসটি সংকলন করেছেন, ইবনুস সুন্নী, নং ৫৪; ইবন মাজাহ, নং ৯২৫। আর আব্দুল কাদের ও শু‘আইব আল-আরনাঊত যাদুল মা‘আদের সম্পাদনায় ২/৩৭৫; এর সনদকে হাসান বলেছেন। আর পূর্ব ৭৩ নং এ ও তা গত হয়েছে।
.
.
▪️সকাল-সন্ধ্যার দু'আ-৭
____
কিয়ামতের দিন রসুলুল্লাহ (স:) এর সুপারিশ লাভ করার জন্য এই দু'আ/ দরূদটি সকাল ও সন্ধ্যায় দশবার বলবেন ইনশাআল্লাহ,
اللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম ‘আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"যে কেউ সকাল বেলা আমার উপর দশবার দরুদ পাঠ করবে এবং বিকাল বেলা দশবার দরুদ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ দ্বারা সৌভাগ্যবান হবে।"
তাবরানী হাদীসটি দু’ সনদে সংকলন করেন, যার একটি উত্তম। দেখুন, মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ ১০/১২০; সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব ১/২৭[৩]
.
.
▪️সকাল- সন্ধ্যার দু'আ-৮
----------------
সকাল সন্ধ্যার এ দু'আটি সাইয়্যিদুল ইসতিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দু'আ হিসেবে পরিচিত। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
"যে ব্যক্তি সকালবেলা অথবা সন্ধ্যাবেলা এটি (‘সায়্যিদুল ইসতিগফার’) অর্থ বুঝে দৃঢ় বিশ্বাসসহকারে পড়বে, সে ঐ দিন রাতে বা দিনে মারা গেলে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।"
[বুখারী, ৭/১৫০, নং ৬৩০৬]
সাইয়্যিদুল ইসতিগফার --
اللّٰهُمَّ أَنْتَ رَبِّيْ لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ
হে আল্লাহ্! আপনি আমার রব্ব, আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা।
আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী ওয়া আনা ‘আব্দুকা,
وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ
আর আমি আমার সাধ্য মতো আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির উপর রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই।
ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্বা‘তু। আ‘উযু বিকা মিন শাররি মা সানা‘তু,
أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِيْ
আপনি আমাকে আপনার যে নিয়ামত দিয়েছেন তা আমি স্বীকার করছি, আর আমি স্বীকার করছি আমার অপরাধ।
আবূউলাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী।
فَاغْفِرْ لِيْ فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
অতএব আপনি আমাকে মাফ করুন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহসমূহ মাফ করে না।
ফাগফির লী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা।
.
.
▪️সকাল-সন্ধ্যার দু'আ-৯
---------------------
কোন বিষধর প্রাণীর ক্ষতি থেকে নিরাপত্তা পাওয়ার জন্য এই দু'আটি সকাল ও বিকালে তিন বার বলবেন,
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ: আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্বা।
অর্থ: আল্লাহ্র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।
"যে কেউ বিকাল বেলা এ দু‘আটি তিনবার বলবে, সে রাতে কোনো বিষধর প্রাণী তার ক্ষতি করতে পারবে না।
রেফারেন্স:
আহমাদ ২/২৯০, নং ৭৮৯৮; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নং ৫৯০; ইবনুস সুন্নী, নং ৬৮; আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৮৭; সহীহ ইবন মাজাহ ২/২৬৬; তুহফাতুল আখইয়ার লি ইবন বায, পৃ. ৪৫।
.
.
▪️সকাল-সন্ধ্যার দু'আ-১০
------------------
শয়তানের হাত থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে সকাল-সন্ধ্যায় এই দু'আটি পড়তে পারেন ইনশাআল্লাহ।
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ،
وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।
অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর, আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
দশটি দাসমুক্তির অনুরূপ ও একশত সওয়াব পাওয়ার জন্য সকাল সন্ধ্যায় ১০ বার [১] অথবা (অলসতা লাগলে) ১ বার [২] বলবে অথবা একশত বার বলবে,
"যে ব্যক্তি এই দু'আ দিনে একশত বার বলবে সেটা তার জন্য দশটি দাসমুক্তির অনুরূপ হবে, তার জন্য একশত সাওয়াব লিখা হবে, সে দিন বিকাল পর্যন্ত সেটা তার জন্য শয়তান থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে বিবেচিত হবে; আর কেউ তার মত কিছু নিয়ে আসতে পারবে না। হাঁ, সে ব্যক্তি ব্যতীত যে তার চেয়েও বেশি আমল করবে। [৩]
রেফারেন্স:
[১] নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইলাহ, নং ২[৪] আরও দেখুন, সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব, ১/২৭২; ইবন বায, তুহফাতুল আখইয়ার পৃ.৪[৪] এর ফযীলতের ব্যাপারে আরও দেখন, পৃ.হাদীস নং ২৫৫।
[২] আবূ দাউদ, নং ৫০৭৭; ইবন মাজাহ, নং ৩৭৯৮; আহমাদ নং ৮৭১৯। আরও দেখুন, সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব, ১/২৭০; সহীহ আবি দাউদ ৩/৯৫৭; সহীহ ইবন মাজাহ ২/৩৩১ ও যাদুল মা‘আদ ২/৩৭৭।
[৩] বুখারী, ৪/৯৫, নং ৩২৯৩; মুসলিম, ৪/২০৭১, নং ২৬৯[১]
__________________
সবশেষে১০টি_আমলই রিপিট করা যাক এবং আপনারা রিমাইন্ডার হিসেবে নিচের অংশটুকু স্ক্রিনশট ও তুলতে পারেন :
১)আয়াতুল কুরসী[১+১ সকাল+সন্ধ্যায় ]
২)সূরা ইখলাস,ফালাক্ব,নাস[প্রত্যেকটি ৩ বার করে]
৩)রদ্বীতু বিল্লা-হি রব্বান[৩+৩]
৪)হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়াহুয়া রব্বুল ‘আরশিল ‘আযীম[৭+৭]
৫)বিস্মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আস্মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম।[৩+৩]
৬)আল্লা-হুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফে‘আন ওয়া রিয্কান তাইয়্যেবান ওয়া ‘আমালান মুতাক্বাব্বালান।[৩+৩]
৭)আল্লা-হুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম ‘আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।[১০+১০]
৮)সাইয়্যিদুল ইসতিগফার[১+১]
৯)আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্বা।[৩+৩]
১০)লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।[১০+১০]
0 Comments