Ad

আমাদের সমাজে প্রচলিত কিছু শিরক




 শরীরে যেকোন প্রকার তাবিজ ঝুলানো শিরক। [মুসনাদে আহমদ: ১৭৪৫৮, সহিহ হাদিস:৪৯২]
.
 আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো নামে কসম করা শিরক। [আবু দাউদ:৩২৩৬(ইফা)]
.
 কোন কিছুকে শুভ-অশুভ লক্ষন বা কুলক্ষণ মনে করা শিরক। [বুখারি :৫৩৪৬, আবু দাউদ:৩৯১০]
.
 মাজারে ও কোন পির-ফকির কিংবা কারো নিকট সিজদা দেয়া শিরক [সুর জীন: ২০, মুসলিম:১০৭৭,
আবু দাউদ, মুত্তাফাকুন আলাই]
.
 আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বা যেকোন পীর-আওলিয়া কিংবা মাজারের নামে নামে মানত করা শিরক। তবে মানত না করাই উত্তম। [সহিহ বুখারি: অধ্যায় : তাকদির]
.
 কেউ পেছন দিক থেকে ডাক দিলে কিংবা নিজে যাত্রার সময় পিছন ফিরে তাকালে যাত্রা অশুভ হয় এই ধারনা বিশ্বাস করা শিরক (বুখারি, আবু দাউদ:৩৯১০)
.
 কোন বিপদে পড়ে আল্লাহকে বাদ দিয়ে "ও মা, ও বাবা" ইত্যাদি বলে এই রকম গায়েবি ডাকা শিরক। বিপদে পড়লে "ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন" বলতে হয়। (সুরা বাকারাহঃ ১৫৬)
.
 আল্লাহর নামে সরাসরি কাউকে সম্মধন করা শিরকে পরিনত হতে পারে যেমন আব্দুর রহমান না বলে শুধু রহমান বলা বা আব্দুল খালিক না বলে শুধু খালিক বলা, আব্দুর রশিদ না বলে শুধু রশিদ বলা, আব্দুর রাকিব না বলে শুধু রাকিব বলা ইত্যাদি [সুরা আরাফ:১৮০, ইসরা: ১১০, হাশর]*
.
 'তর ভবিষ্যত অন্ধকার', 'তর কপালে বহুত কষ্ট আছে', এইধরনের গায়েবি কথা কাউকে বলা শিরক। [সুরা নমল: ৬৫, আল জিন:২৫-২৬, আনাম:৫৯]
.
 হোচট খেলে কিংবা পেচা ডাকলে সামনে বিপদ আছে এই ধারনা শিরক (সুরা আনাম:১৭, ইউনুস:১০৭)
.
 রোগ ব্যাধি বা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে শরিরে পিতলের বালা, শামুক, ঝিনুকের মালা, সুতা, কিংবা যেকোন প্রকারের বস্তু লটকানো শিরক।
[তির্মিযি, আবু দাউদ ও হাকেম]
.
 সকালে বেচাকেনা না করে কোন কাষ্টমারকে বাকি দিলে কিংবা সন্ধ্যার সময় কাউকে বাকি দিলে ব্যাবসায় অমংগল হয় এই ধারনা করা শিরক!।
(আবু দাউদঃ৩৯১০)
.
 সফলতা কিংবা মংগল লাভের জন্য এবং অমংগল থেকে রক্ষা পেতে যেকোন প্রকার আংটি ব্যাবহার করা শিরক।[সুরা আনাম:১৭, ইউনুস :১০৭]
.
 যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন করা শিরক। যেমন: পতাকা, স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি। [সুরা বাকারাহ:২৩৮, আহকাফ:৫, ফাতহুল বারি ৭/৪৪৮, আবু দাউদ:৪০৩৩]
.
 আল্লাহর ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কিংবা লোক দেখানো ইবাদাত করা শিরক। [সুরা আনাম:১৬২, বাইয়িনাহঃ ৫, কাহফ: ১১০, ইমরান:৬৪, ইবনে মাজাহ হা নং৫২০৪]
.
 আল্লাহ ব্যাতিত কোন গণক বা অন্য কেউ গায়েব জানে এই কথা বিশ্বাস করা শিরক। [সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৬, আনাম:৫৯]
.
 পায়রা/ কবুতর উড়িয়ে শান্তি কামনা করা শিরক, কারন শান্তিদাতা একমাত্র আল্লাহ। (সুরা হাশরঃ ২৩)
.
 আল্লাহর ছাড়া কোন পির-আওলিয়া এবং কোন মাজারের নিকট দুয়া করা বা কোন কিছু চাওয়া শিরক। [সুরা ফাতিহা:৪, আশ শোআরা:২১৩, গাফির: ৬০, তির্মিযি]
.
 "আপনি চাইলে এবং আল্লাহ চাইলে এই কাজটি হবে" এই কথা বলা শিরক (নাসাঈ শরিফ)
.
এইরকম আরো অসংখ্য শিরক সমাজে বিদ্যামান।
.
আল্লাহ বলেন,"অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে। (সুরা ইউসুফঃ ১০৬)
.
মনে রাখবেন,,
শিরক এমন একটি গুনাহ যা করলে ঈমান এবং পূর্বের সমস্ত আমল সম্পুর্ন নষ্ট হয়ে যায়। কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুবাহান্তায়ালা যেকোন গুনাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কস্মিনকালে ও ক্ষমা করবেন না।
আল্লাহ বলেন,,
নিসন্দেহে আল্লাহ ইচ্ছা করলে যেকোন গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না
(সুরা নিসা :৪৮,১১৬)
..
নিশ্চয় যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং জাহান্নামকে অবধারিত করে দেন (সুরা মায়িদাহ:৭২)
.
রাসুল্লাহ (সা) বলেছেন,, “আমার সামনে জিব্রাঈল আবির্ভূত হলেন। তিনি বললেন, আপনি আপনার উম্মতদের সুসংবাদ দিন, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সংগে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে? তিনি বললেন: যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে। [সহিহ বুখারি :১২৩৭,মুসলিম:৯৪]
.
শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধ্বংসত্মাক বিষয়। শত পাপ করলে ও কিয়ামতের দিন তা ক্ষমার সম্ভবনা আছে কিন্তু শিরকের পাপ ক্ষমার কোন সম্ভবনাই নেই এবং তা নিসন্দেহে জাহান্নামে নিয়ে যাবে।
.
ইয়া আল্লাহ আমাদের সকলকে শিরক থেকে বাচার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Post a Comment

0 Comments